সমাজে নারীর প্রতি সহিংসতার ঘটনা ঘটেই চলেছে। নারীদের নিরাপত্তাহীনতা বাড়ছে। বাল্যবিবাহ বাড়ছে। এ অবস্থা পরিবর্তনে সহিংসতা সৃষ্টির মূল ক্ষেত্র পরিবারের সদস্যদের মধ্যে নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। নারীকে মর্যাদা দেওয়া শেখাতে হবে।
আজ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন বক্তারা। অনলাইনে অনুষ্ঠিত এ সভায় অংশ নিয়ে নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধে মতামত তুলে ধরেন সংগঠনের জেলা শাখার তরুণী সদস্যরা।
বক্তারা বলেন, নির্যাতনের শিকার নারীর পরিচয় গোপন রেখে আইনি সহায়তা কার্যক্রম জোরদার, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারীর প্রতি অবমাননাকর বক্তব্য প্রচার বন্ধ, নারীর জন্য সম্পদ-সম্পত্তিতে সমান অধিকার দেওয়া এবং সাংস্কৃতিক চর্চার উদ্যোগ নিতে হবে। বাল্যবিবাহ বন্ধে অভিভাবক ছাড়া আদালতে গিয়ে নোটারির মাধ্যমে বাল্যবিবাহ করার বিরুদ্ধে সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে।
বক্তারা আরও বলেন, অনলাইন ব্যবহারের বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করতে স্কুল-কলেজে সচেতনতামূলক পরামর্শ দিতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ে কমিটি তৈরি করতে হবে। অর্থনৈতিক কাজে দক্ষতা তৈরির জন্য নারীদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে। নারীদের বাল্যবিবাহসহ যেকোনো বৈষম্যমূলক আচরণের প্রতিবাদে ‘না’ বলা শিখতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম বলেন, নারীর মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য অর্জন করতে নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতা বন্ধ করা জরুরি। নারী ও কন্যার প্রতি নির্যাতন কেবল নারীর ইস্যু নয়, সামাজিক ইস্যু। সহিংসতার কারণে যে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়, তার প্রভাব পুরো সমাজের ওপর পড়ে। তরুণসমাজকে সহিংসতা বন্ধে সক্রিয় ও অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।
স্বাগত বক্তব্যে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু বলেন, এবারের আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ও বিশ্ব মানবাধিকার দিবস পালন উপলক্ষে গৃহীত ১৬ দিনের কর্মসূচি পালনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ বৈশ্বিক নারী আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করছে। নারীর প্রতি সহিংসতা নির্মূল করা না হলে প্রকৃত উন্নয়ন অর্জন সম্ভব হচ্ছে না।
মতবিনিময় সভায় বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় ও ঢাকা মহানগর কমিটির নেতা, ১৫টি জেলা শাখার তরুণী সদস্য, সংগঠক, কর্মকর্তাসহ শতাধিক ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন। সভা সঞ্চালনা করেন সংগঠনের গবেষণা কর্মকর্তা আফরুজা আরমান।