শ্রমিকদের ন্যায়বিচার পাওয়ার পথ সহজ করা নিয়ে ‘হ্যাকাথন’
ন্যায়বিচারে শ্রমিকদের প্রবেশাধিকার-বিষয়ে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো ‘হ্যাকাথন’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে ‘বিলম্ব ন্যায়বিচারকে অস্বীকার করে: শ্রম আদালতের এ-সংক্রান্ত সংকটের সমাধান’ বিষয়ে উদ্ভাবনী ধারণা উপস্থাপনকারী দল বিজয়ী হয়েছে। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
২০ থেকে ২১ অক্টোবর ঢাকায় এই ‘হ্যাকাথন’ অনুষ্ঠিত হয়। হ্যাকাথনে বাংলাদেশে ন্যায়বিচারে শ্রমিকদের প্রবেশাধিকারের পথ সহজ করতে উদ্ভাবনী ধারণার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়।
হ্যাকাথনের যৌথ আয়োজক ছিল বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট) ও ডেভেলপমেন্ট রিসার্চ নেটওয়ার্ক (ডিনেট)। সহযোগিতায় ছিল যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব সাউথ ক্যারোলিনার রুল অব ল কলাবরেটিভ (আরওএলসি)।
হ্যাকাথনের লক্ষ্য ছিল অংশগ্রহণকারীদের জ্ঞান, অভিজ্ঞতা, দক্ষতা ও সৃজনশীলতাকে কাজে লাগিয়ে কর্মযোগ্য ধারণাসহ সমাধান তৈরি।
মোট ৫টি ক্ষেত্র এই হ্যাকাথনে নির্বাচিত করা হয়। এগুলো হলো—
ব্যবসা ও শ্রম অধিকার: ন্যায়বিচার প্রক্রিয়া উন্নত করতে বেসরকারি খাতকে কাজে লাগানো।
ব্যবধান পূরণ: আনুষ্ঠানিক-অনানুষ্ঠানিক শ্রমিকদের ন্যায়বিচারপ্রাপ্তির পথ উন্নয়ন করা।
ন্যায়বিচার প্রক্রিয়া আধুনিকীকরণ ও উদ্ভাবন: ২১ শতকের উপায়-উপকরণের মাধ্যমে শ্রম আইনের প্রয়োগ উন্নত করা।
বিলম্বিত বিচার হলো ন্যায়বিচার অস্বীকার: এ-সংক্রান্ত শ্রম আদালতের সংকট সমাধান করা।
শ্রমিকদের অধিকার ও জলবায়ু ন্যায়বিচার: ইন্টারসেকশনাল হিউম্যান রাইটস।
আইনজীবী, আইনের শিক্ষার্থী, উদ্যোক্তা, সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার, ব্যবসা প্রশাসনের পেশাজীবীর সমন্বয়ে গঠিত ৫টি দল হ্যাকাথনে অংশ নেয়।
হ্যাকাথনে অংশগ্রহণকারী প্রতিটি দলের প্রতিযোগী, পরামর্শদাতা, বিচারক—প্রত্যেকে শ্রমিকদের অধিকার প্রচারে আগ্রহ প্রদর্শন করেন।
আইনজীবী, ট্রেড ইউনিয়ন ও শ্রম অধিকার গোষ্ঠীর প্রতিনিধি হ্যাকাথনে পরামর্শদাতা (মেন্টর) হিসেবে প্রতিটি দলকে সহায়তা করেন। এর লক্ষ্য ছিল, যাতে উদ্ভাবিত ধারণাগুলো পেশাগত অভিজ্ঞতা ও একাডেমিক দৃষ্টিভঙ্গির ভিত্তিতে বাস্তবে রূপ নিতে পারে।
মেন্টরদের মধ্যে ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অনিক আর হক, ট্যানারি ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সভাপতি ও ঢাকার শ্রম আদালতের সাবেক সদস্য আবুল কালাম আজাদ, ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগের সিনিয়র লেকচারার নাবিলা ফারহিন, লিগ্যাল সার্কেলের সিনিয়র অ্যাসোসিয়েট ও আইনজীবী পুষ্প রহমান, ডিনেটের হেড অব টেকনোলজি আন্দালিব বিন হক।
প্রতিটি দল নির্ধারিত বিষয়ে শ্রমিকদের ন্যায়বিচার পাওয়ার সমস্যার সমাধানে কাজ করে। দলগত কাজের পর তারা উদ্ভাবিত ধারণাগুলো বিচারক প্যানেলের কাছে উপস্থাপন করে।
বিচারক প্যানেলে ছিলেন শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান এম এ আউয়াল, উদ্যোক্তা-ব্যবসায়ী নেতা সাদাফ সাজ সিদ্দিকী, ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো মাহিন সুলতান, ডিনেটের নির্বাহী পরিচালক এম শাহাদাত হোসেন ও ব্লাস্টের বোর্ড অব ট্রাস্টি নুরুল আলম।