নীতিমালা তৈরি, দক্ষতা উন্নয়ন এবং বিজ্ঞাপনী খাতকে শক্তিশালী করে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়াতে কাজ করতে চায় অ্যাডভার্টাইজিং এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এএএবি)। এই শিল্পকে তার সর্বোচ্চ কার্যক্ষমতায় পরিচালনা করতে হলে সবার শক্তি এবং অভিজ্ঞতার ওপর নির্ভর করতে হবে। বিজ্ঞাপনী সংস্থা ও ক্লায়েন্টরদের মধ্যে পারস্পরিক বুদ্ধিবৃত্তিক বোঝাপড়া উন্নয়নের দিকে জোর দিতে হবে।
রাজধানীর বনানী ক্লাবে এএএবির প্রথম নেটওয়ার্কিং ইভেন্টে বক্তারা এসব কথা বলেন। ‘এএএবি হাব ২০২৪’ শীর্ষক এই ইভেন্ট হয় গত সোমবার। নতুন নির্বাহী কমিটি গঠনের পর এএএবির এটিই প্রথম নেটওয়ার্কিং ইভেন্ট। অনুষ্ঠানে প্রায় ৬০টির বেশি বিজ্ঞাপনী সংস্থার স্বত্বাধিকারী, সিইও, অ্যাসোসিয়েশন এবং কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। এতে বিশেষ বক্তা ছিলেন ইউনিলিভার বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ জাভেদ আকতার।
মার্কেটিং ও ব্র্যান্ডের গুরুত্ব তুলে ধরে ইউনিলিভার বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ জাভেদ আকতার বলেন, ‘সৃজনশীলতাকে কেন্দ্র করেই এখনো বিজ্ঞাপনজগৎ আবর্তিত হচ্ছে। বিজ্ঞাপনের লেখা কতটা কার্যকর বা এটি দর্শকদের সঙ্গে কতটা সংযোগ স্থাপন করে, তার শুরু গবেষণার মাধ্যমে নির্ধারিত হলে আরও কার্যকর হবে। এখনকার এই নতুন সময়ের প্রধান চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে রয়েছে বড় ডেটা এবং ছোট ডেটা ব্যবহারের সামঞ্জস্য রক্ষা করা।’ তিনি এজেন্সি এবং ক্লায়েন্টরদের মধ্যে সম্পর্কোন্নয়নের চেয়ে পারস্পরিক বুদ্ধিবৃত্তিক বোঝাপড়া উন্নয়নের দিকে জোর দেওয়ার ব্যাপারেও আলোকপাত করেন।
স্বাগত বক্তব্যে সংগঠনটির সভাপতি সানাউল আরেফিন বাংলাদেশের বিজ্ঞাপন শিল্পের অগ্রগতির কথা তুলে ধরেন এবং এই শিল্পের বিকাশে সম্মিলিত উদ্যোগের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, ‘সময় এসেছে আমাদের নিজের দায়িত্ববোধ থেকে একটি সচেতনতার ক্যাম্পেইন পরিচালনার, যা মানুষের মনে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করবে। ভালো ঘটনা সব সময় ভালো, সেটি মানুষকে বোঝানো জরুরি। বিজ্ঞাপনী সংস্থাগুলো মিলে আমরা এই ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে দেশের জন্য ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে চাই।’
এএএবির ভবিষ্যৎ উদ্দেশ্য এবং লক্ষ্য সম্পর্কে এর জেনারেল সেক্রেটারি সৈয়দ আহসানুল আপন বলেন, ‘আমরা শিল্প এবং সরকারের মধ্যে সেতুবন্ধ হিসেবে কাজ করতে চাই। আমরা ন্যায্য নীতিমালা তৈরি, উদ্ভাবনের প্রচার, দক্ষতা উন্নয়ন এবং বিজ্ঞাপনী খাতকে শক্তিশালী করে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়াতে কাজ করব। সঠিক ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে আমরা কর্মসংস্থান সৃষ্টি, ট্যাক্স আয় বৃদ্ধি এবং সামগ্রিক সামাজিক ও অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে ভূমিকা রাখতে চাই।’
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন কার্যনির্বাহী কমিটির সহসভাপতি নাজিম ফারহান চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের বিজ্ঞাপনী শিল্প এখন বড় ধরনের পরিবর্তন এবং উত্থানের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। আমাদের এই শিল্পকে তার সর্বোচ্চ কার্যক্ষমতায় পরিচালনা করতে হলে সবার শক্তি এবং অভিজ্ঞতার ওপর নির্ভর করতে হবে।’
উল্লেখ্য, ১৯৭৮ সালে যাত্রা শুরু করে অ্যাডভার্টাইজিং এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এএএবি)। বাংলাদেশে যেসব প্রতিষ্ঠান নিয়মতান্ত্রিকভাবে টেলিভিশন, খবরের কাগজ, ডিজিটাল, ইভেন্ট, আউটডোর, অ্যাকটিভেশন ইত্যাদি নানা মাধ্যমে যে কমিউনিকেশন ব্যবসা করছেন, তাঁদের পরিচালক পর্ষদের (স্বত্বাধিকারী) একজন নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে (এএএবি)-এর সদস্য হতে পারেন।
অনুষ্ঠানে বিজ্ঞাপনজগতের অগ্রজ গীতি আরা সাফিয়া চৌধুরী, রামেন্দু মজুমদার, সারা যাকের, মুনির আহমেদ খান, ইউসুফ হাসান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা এই নেটওয়ার্কিং হাবের গুরুত্ব নিয়ে ইতিবাচক মতামত প্রকাশ করেন এবং বিজ্ঞাপনী শিল্পের পেশাদারদের মধ্যে সম্পর্ক জোরদার করার পাশাপাশি বিজ্ঞাপনী শিল্পকে আরও সমৃদ্ধ করতে ভূমিকা রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেন।