অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড বাতিল করায় ক্ষোভ সাংবাদিকদের

বাংলাদেশ সচিবালয়ফাইল ছবি

সাংবাদিকদের অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড দিয়ে সচিবালয়ে প্রবেশাধিকার বাতিল করায় তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ নিয়ে অনেক সাংবাদিক প্রতিবাদ জানিয়েছেন, ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। উদ্বেগ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন।

এমন প্রেক্ষাপটে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ বিভাগ থেকে বলা হয়েছে, সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার তদন্ত চলমান থাকার পরিপ্রেক্ষিতে সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকারের বিষয়ে যে সিদ্ধান্ত হয়েছে, তা সাময়িক। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সভা করে দ্রুত এ বিষয়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

অন্যদিকে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, সরকার শিগগিরই বিদ্যমান প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন কার্ডগুলো পর্যালোচনা করবে এবং নতুন অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড দেওয়ার জন্য তথ্য অধিদপ্তরের মাধ্যমে সব স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের কাছ থেকে নতুন আবেদন আহ্বান করবে।

এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, এ নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে. জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর সঙ্গে আজ রোববার সচিবালয়ে কর্মরত সাংবাদিকদের সংগঠন বাংলাদেশে সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরামের প্রতিনিধিদের বৈঠক হবে। সেখান থেকে সাংবাদিকদের বিষয়ে কোনো ইতিবাচক সিদ্ধান্ত আসতে পারে।

গত শুক্রবার রাতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দায়িত্বরত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. খোদা বখস চৌধুরীর সই করা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সচিবালয়ে প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এতে বলা হয়, বাংলাদেশ সচিবালয়ের সার্বিক নিরাপত্তা বৃদ্ধির স্বার্থে সচিবালয়ে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনুকূলে দেওয়া স্থায়ী প্রবেশ পাস (ডিজিটাল এক্সেস কন্ট্রোল সিস্টেম) এবং সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য দেওয়া অস্থায়ী প্রবেশ পাস ছাড়া সব ধরনের অস্থায়ী (বেসরকারি ব্যক্তিদের জন্য) সচিবালয় প্রবেশ পাস বাতিল করা হলো। সাংবাদিকদের অনুকূলে ইস্যু করা অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড দ্বারা সচিবালয়ে প্রবেশাধিকার পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বাতিল করা হলো।

বাতিল করা বিভিন্ন শ্রেণির সচিবালয় প্রবেশ পাসধারীরা আগামী ১৫ দিনের মধ্যে বাংলাদেশ পুলিশ, ক্রাইম কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টার, ডিএমপি, ১৫ আবদুল গণি রোড, ঢাকায় স্থাপন করা বিশেষ সেলের মাধ্যমে নতুন করে অস্থায়ী প্রবেশ পাসের জন্য আবেদন করতে পারবেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের দুই কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে পরবর্তী আদেশ না দেওয়া পর্যন্ত সেই সেলে দায়িত্ব পালনের জন্য সংযুক্ত করা হয়েছে।

সংযুক্ত দুই কর্মকর্তা–কর্মচারী হলেন সিনিয়র সহকারী সচিব (প্রশাসন-৩ শাখায় সংযুক্ত) এফ এম তৌহিদুল আলম ও অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক (সচিবালয় নিরাপত্তা শাখা) মৃত্যুঞ্জয় বাড়ৈ।

এর পর থেকেই সাংবাদিকেরা তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখান। এ নিয়ে গতকাল প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং বলেছে, ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়ের নিরাপত্তা বিবেচনায় অন্যান্য সব বেসরকারি পাসের পাশাপাশি অ‍্যাক্রিডিটেশন কার্ড নিয়ে সাংবাদিকদের প্রবেশও সীমিত করা হয়েছে। সরকার শিগগিরই বিদ্যমান প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন কার্ডগুলো পর্যালোচনা করবে এবং নতুন অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড দেওয়ার জন্য তথ‍্য অধিদপ্তরের মাধ্যমে সব স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের কাছ থেকে নতুন আবেদন আহ্বান করবে। এই সময়ে যেকোনো ইভেন্টের জন্য সাংবাদিকেরা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে নিয়মিত অস্থায়ী প্রবেশ কার্ড পাবেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নিউ এজ পত্রিকার সম্পাদক নূরুল কবীর প্রথম আলোকে বলেন, তিনি ভড়কে গিয়েছিলেন। পরে প্রধান উপদেষ্টার অফিস থেকে ব্যাখ্যা দিয়ে বলা হয়েছে, প্রচুর জাল কার্ড দেওয়া হয়েছিল। তাড়াতাড়ি কার্ডগুলো পর্যালোচনা করে নতুন অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড দেওয়া হবে। এতে তিনি আশ্বস্ত হয়েছেন।