টেকনাফে জামায়াত নেতার বাড়িতে অভিযান ঘিরে বিক্ষোভ, ভাঙচুর

কক্সবাজারের টেকনাফে এক জামায়াত নেতার বাড়িতে অভিযানের প্রতিবাদে বের করা মিছিল থেকে ভাঙচুর করা হয় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কার্যালয়। আজ সন্ধ্যায়প্রথম আলো

কক্সবাজারের টেকনাফে এক জামায়াত নেতার বাড়িতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অভিযান ঘিরে বিক্ষোভ ও অধিদপ্তরের কার্যালয়ে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। আজ সোমবার রাত আটটার দিকে টেকনাফ পৌরসভা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, আজ সন্ধ্যা ৬টার দিকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী টেকনাফ পৌরসভার সহসভাপতি ও সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোহাম্মদ ইসমাইলের বাড়িতে অভিযানে যায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের একটি দল। তাঁর বাড়ি পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের জালিয়াপাড়া এলাকায়। মোহাম্মদ ইসমাইল সন্ধ্যায় বাড়িতেই ছিলেন। অভিযানের এক পর্যায়ে ইসমাইল ও স্থানীয় লোকজনের বাধায় অভিযান পরিচালনা করা দলের সদস্যরা চলে যান।

এ ঘটনার প্রতিবাদে সন্ধ্যা সাতটায় নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করেন মোহাম্মদ ইসমাইল। সংবাদ সম্মেলন শেষে জালিয়াপাড়া এলাকা থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন ইসমাইলের অনুসারীরা। মিছিলটি টেকনাফ বাসস্টেশনের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে হোটেল নিউ গার্ডেনে অবস্থিত অধিদপ্তরের কার্যালয়ের দিকে যায়। এ সময় ভাঙচুর করা হয় অধিদপ্তরে কার্যালয়।

জামায়াত নেতা মোহাম্মদ ইসমাইল অভিযোগ করে বলেন, ‘সন্ধ্যা ৬টার দিকে চারজন ব্যক্তি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা পরিচয়ে আমাকে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা করেন। তখন স্থানীয় কিছু লোকজন এসে আমাকে উদ্ধার করে। ওই কর্মকর্তারা সাদাপোশাকে এসেছিলেন। স্থানীয় লোকজনের বাধার মুখে তাঁরা দ্রুত চলে যান। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত চাই।’

জামায়াত নেতা মোহাম্মদ ইসমাইল
ছবি: সংগৃহীত

ইসমাইলের অভিযোগের বিষয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের টেকনাফ অঞ্চলের সহকারী পরিচালক সিফাত তাসনিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘ইসমাইলের বাড়িতে ইয়াবা রয়েছে, এমন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযানে যায় অধিদপ্তরের একটি দল। এ সময় নির্দিষ্ট পোশাক পরে ছিলেন দলের সদস্যরা। পরে ইসমাইল বাধা দেন। চিৎকার করে লোকজন জড়ো করেন। এ সময় ইটপাটকেলের আঘাতে তাঁদের তিন সদস্য আহত হয়েছেন।’

সিফাত তাসনিম বলেন, মিছিল নিয়ে ইসমাইলের অনুসারীরা অধিদপ্তরের কার্যালয়ে ভাঙচুর চালিয়েছেন। পাশাপাশি তিন সদস্যকে আহত করেছেন। এসব ঘটনায় তাঁরা আইনগত পদক্ষেপ নেবেন।

জানতে চাইলে টেকনাফ উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা রফিক উল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত চান তিনি এবং মোহাম্মদ ইসমাইলের বাড়িতে অভিযানের নিন্দা জানান।

ইসমাইলের বিরুদ্ধে থানায় মামলা রয়েছে কি না, জানতে চাইলে টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন তা জানাতে পারেননি। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, বিক্ষোভকারীরা অধিদপ্তরের কার্যালয়ে ভাঙচুর চালিয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গেছে। তবে এখনো কোনো পক্ষের অভিযোগ পাওয়া যায়নি।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কার্যালয়ে হামলার ঘটনা তিনি শুনেছেন। ঘটনাস্থলে পুলিশ ও বিজিবি পাঠানো হয়েছে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।