শিক্ষাঙ্গনে বিভিন্ন যৌন নিপীড়নের যেসব ঘটনা সংবাদমাধ্যমে আসছে, তা থেকে দেখা যায়, এ ধরনের ঘটনা ঘটলে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তদন্ত কমিটি করে। তারপর তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের জন্য অপেক্ষা করা হয়। কিন্তু অপরাধ ও অসদাচরণ আলাদা বিষয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও নিয়ম ভঙ্গ করে বা এ ধরনের কিছু করা হলে তা সাধারণত অসদাচরণ হয়ে থাকে।
কিন্তু যৌন নিপীড়ন সম্পূর্ণ ফৌজদারি অপরাধ। অসদাচরণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে পারে। কিন্তু যৌন নিপীড়নের মতো ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কাউকে কারাগারে পাঠাতে পারে না। এ ধরনের অপরাধ তদন্ত করার একমাত্র এখতিয়ার পুলিশের।
তাই বিশ্ববিদ্যালয়ে এ ধরনের ঘটনা ঘটলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের উচিত অভিযোগকারীকে সুরক্ষা দিয়ে থানায় নিয়ে গিয়ে এজাহার দায়ের করা। কিন্তু থানায় দেরি করে অভিযোগ দিলে অপরাধের মামলা দুর্বল হয়ে যায়। তাই এ ধরনের অভিযোগের ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তদন্তের নামে দেরি করার অর্থ হলো ফৌজদারি অপরাধকে দুর্বল করে দেওয়া। কর্তৃপক্ষ অজ্ঞতাপ্রসূত হয়ে অথবা অপরাধীকে প্রশ্রয় দেওয়ার জন্য এমনটি করে থাকতে পারে।
তাই যৌন নিপীড়নের অভিযোগ উঠলে ফৌজদারি আইন অনুযায়ী যা করার, তা-ই করা উচিত। কিন্তু আমরা প্রায়ই দেখি, এ ধরনের অপরাধের ক্ষেত্রে প্রক্টর বা অন্যদের দিয়ে তদন্ত কমিটি করা হয়। ফলে যে অপরাধের জন্য কারাদণ্ড হওয়ার কথা, তা হচ্ছে না। বরং একধরনের প্রশ্রয় থেকে এ ধরনের ঘটনা বাড়ছে বলে মনে হয়।
ড. শাহদীন মালিক: আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট