ছাত্রলীগের নির্যাতনে আহত চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের (চমেক) দুই ছাত্র সাকিব হোসেন ও জাহিদ হোসেনকে আজ মঙ্গলবার বিকেলে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) থেকে ছাত্র কেবিনে স্থানান্তর করা হয়েছে। নিরাপত্তা নিশ্চিতে কেবিনে তাঁদের জন্য সার্বক্ষণিকভাবে দুজন আনসার সদস্য নিয়োগ করা হয়েছে।
এদিকে এই ঘটনায় আজ দুপুরে একাডেমিক কাউন্সিলের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছাত্রদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে শিক্ষকেরা মতামত দিয়েছেন বলে জানা গেছে। সাত কর্মদিবসের মধ্যে ঘটনা তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে চমেক অভিযোগ নিষ্পত্তি কমিটিকে বলা হয়েছে।
চমেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক সাহেনা আক্তার বলেন, দুই ছাত্র যে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে, তা তদন্ত কমিটির হাতে দেওয়া হয়েছে। তাঁরা তদন্তের জন্য সাত কর্মদিবস সময় চেয়েছেন। সবার সঙ্গে কথা বলবেন। তারপর প্রতিবেদন দেবেন।
ছাত্রশিবির সন্দেহে গত বুধবার চমেক চতুর্থ বর্ষের চার ছাত্রকে প্রধান ছাত্রাবাসের তিনতলার একটি কক্ষে (১৭ সি) নিয়ে মারধর করা হয়। তাঁদের সঙ্গে আরও দুজন ছাত্রকেও মারধর করা হয়। তাঁরা হলেন আবু রাইয়াত ও মোবাশ্বির হোসেন। দুজনই এখন তাঁদের নিজ নিজ বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পুলিশ ও শিক্ষকেরা গিয়ে ছাত্রাবাস থেকে সাকিব ও জাহিদকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। তাঁদের আইসিইউতে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল। নিরাপত্তাজনিত কারণে মূলত তাঁদের আইসিইউতে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল। সেখানেও ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা তাঁদের পুনরায় হুমকি দেন বলে লিখিত অভিযোগে জানান এই দুই শিক্ষার্থী।
হাসপাতালের অবেদনবিদ ও আইসিইউ বিভাগের প্রধান অধ্যাপক হারুনুর রশিদ প্রথম আলোকে বলেন, তাঁদের শারীরিক অবস্থার উন্নতি হওয়ায় আজ বিকেলে কেবিনে স্থানান্তর করা হয়। দুজনের অবস্থা এখন ভালো। আরও কয়েক দিন চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে থেকে তাঁরা চলে যেতে পারবেন।
তবে কেবিনে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন দুই ছাত্র ও তাঁদের অভিভাবকেরা। আহত ছাত্র সাকিবের ভাই মিজানুর রহমান বলেন, বিকেলে তাঁদের কেবিনে নিয়ে আসা হয়। স্বাভাবিকভাবে কিছুটা ভয় কাজ করছে। তাই কর্তৃপক্ষ দুজন আনসার সদস্য নিয়োগ করেছে।
এর আগে গতকাল সোমবার দুই ছাত্র অধ্যক্ষ বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেন। তাতে তাঁদের মারধর করার ঘটনা তুলে ধরেন। আজ মঙ্গলবার বেলা একটায় অনুষ্ঠিত একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। অভিযোগ নিষ্পত্তি কমিটিকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।
অভিযোগ নিষ্পত্তি কমিটির আহ্বায়ক উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক হাফিজুল ইসলাম, সদস্যসচিব অধ্যাপক মিজানুর রহমান চৌধুরী। জানতে চাইলে চমেক উপাধ্যক্ষ মো. হাফিজুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা দ্রুত প্রতিবেদন দেব। প্রয়োজন হলে আমরা আরও সদস্যকে এতে নিতে পারব। আপাতত নয় সদস্য রয়েছেন। এর মধ্যে কিছু কাজ এগিয়েছে।’