কক্সবাজারে জিথ্রি রাইফেলসহ গ্রেপ্তার পাঁচ ‘অস্ত্র ব্যবসায়ী’
কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে একটি জিথ্রি রাইফেল, ৯২ রাউন্ড রাইফেলের গুলি ও দুটি ওয়ান শুটারগান উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে পাঁচজনকে। গতকাল বুধবার থেকে আজ বৃহস্পতিবার ভোর পর্যন্ত চলা অভিযানে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন উখিয়ার মাদারবুনিয়া এলাকার মো. ছৈয়দের ছেলে মোস্তাক আহমদ (৩৭), মৃত নুর নবীর ছেলে কাশেম প্রকাশ মনিয়া (৩৮), মোস্তাক আহমদের মেয়ে লতিফা আক্তার (৩৪), মহেশখালীর মাঝের ডেইল এলাকার আনজু মিয়ার ছেলে রবিউল আলম (২৮), নতুনবাজার এলাকার মৃত আবুল হাশেমের ছেলে বেল্লাল হোসেন (৩৮)।
পুলিশের দাবি, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা অস্ত্র ব্যবসায়ী। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে অস্ত্র ও গোলাবারুদ সংগ্রহ করে তাঁরা বাংলাদেশে বিভিন্ন সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর হাতে পৌঁছে দিচ্ছেন।
অভিযানের বিষয়ে আজ বিকেলে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে জেলা পুলিশ সুপার মো. মাহাফুজুল ইসলাম অভিযানের বিষয়ে বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, মিয়ানমার থেকে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে এসে অপরাধী চক্রের কাছে হস্তান্তরের প্রস্তুতি চলছিল। খবর পেয়ে উখিয়ার মাদারবুনিয়া এলাকার গহিন পাহাড়ের একটি বাড়ি থেকে মোস্তাক, রবিউল আলম ও কাশেমকে দুটি ওয়ান শুটারগান, ৭৭ রাউন্ড গুলি ও ২৪টি গুলির খোসাসহ গ্রেপ্তার করা হয়। টেকনাফ থেকে পালিয়ে মহেশখালী যাওয়ার সময় গ্রেপ্তার করা হয় বেল্লালকে। বেল্লালের তথ্যে টেকনাফের শাপলাপুর এলাকার সমুদ্রতীরবর্তী ঝাউবাগানের ভেতরে বালুচাপা অবস্থায় জার্মানির তৈরি একটি জিথ্রি রাইফেল, একটি ম্যাগাজিন ও ১৫ রাউন্ড গুলি উদ্ধার হয়।
পুলিশ সুপার বলেন, গ্রেপ্তার মোস্তাক ডাকাতি, অস্ত্র, মাদকসহ বিভিন্ন অভিযোগে করা একাধিক মামলার পলাতক আসামি। রবিউল আলমের বিরুদ্ধেও হত্যাসহ পৃথক অভিযোগে চারটি মামলা রয়েছে।
পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তার পাঁচজনের বিরুদ্ধে আজ দুপুরে টেকনাফ ও উখিয়া থানায় পৃথকভাবে মামলা হয়েছে। পরে তাঁদের আদালতে হাজির করে পাঁচ দিনের রিমান্ডের অনুমতি চায় পুলিশ। তবে রিমান্ডের শুনানি হয়নি।
এর আগে গতকাল কক্সবাজারের উখিয়ার লাল পাহাড়ে অভিযান চালিয়ে ১৮টি গ্রেনেড, ১৩টি ককটেল, ১টি বিদেশি রিভলবার, ১টি এলজিসহ বিপুল গোলাবারুদ উদ্ধার করে র্যাব। অভিযানে মো. শাহানুর ও মো. রিয়াজ নামের দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। র্যাব জানায়, পাহাড়ে এসব অস্ত্র মজুত করেছিল মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান স্যালভেশন আর্মি (আরসা)। গ্রেপ্তার শাহানুর আরসার বাংলাদেশ শাখার কমান্ডার ও রিয়াজ তাঁর সহযোগী। র্যাব-১৫ কক্সবাজার কার্যালয়ের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন বলেন, মাদক চোরাচালান, আশ্রয়শিবিরের নিয়ন্ত্রণ ও আধিপত্য বিস্তারের জন্য আরসা প্রতিবেশী দেশ থেকে ভারী অস্ত্র ও গোলাবারুদ সংগ্রহ করে দেশের বিভিন্ন আস্তানায় মজুত করছে।