ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ

ওই শিক্ষকের বহিষ্কার দাবি করে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের সামনে মানববন্ধন করেন এক দল শিক্ষার্থী
ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে৷ ওই শিক্ষকের বহিষ্কার দাবি করে আজ বুধবার এক দল শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের সামনের রাস্তায় বসে বিক্ষোভ করেন। পরে তাঁরা উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দেন। উপাচার্য এ এস এম মাকসুদ কামাল এ ঘটনায় নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।

এদিকে অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে আজ বিকেল ও সন্ধ্যায় মুঠোফোনে বেশ কয়েকবার কল করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। এর আগে ওই শিক্ষক গত জানুয়ারি ও ২০১৪ সালে দুই ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ উঠেছিল।

অভিযোগে ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী বলেছেন, গত ১১ সেপ্টেম্বর হল বিষয়ে পরামর্শ নেওয়ার জন্য বিভাগের অফিস কক্ষের সামনে গেলে ওই শিক্ষক নিজের কক্ষে তাঁকে ডাকেন। কক্ষে গেলে তিনি  প্রয়োজনীয় দু-একটা কথা বলার পরপরই অপ্রাসঙ্গিক কথা বলতে শুরু করেন। তাঁর (ছাত্রী) বাবা নেই জানার পর তিনি নানা ধরনের সাহায্যের প্রলোভন দেখান এবং একা তাঁর সঙ্গে দেখা করতে, তাঁর কাছ থেকে বই নিতে বলেন। এবং এ বিষয় কাউকে কিছু না বলতে বলেন। এরপর তাঁর মুঠোফোন নম্বর নেন এবং একরকম জোর করেই তাঁর মেসেঞ্জারে নক করেন এবং যুক্ত হতে বাধ্য করেন। শিক্ষকের কথার ধরন এবং অঙ্গভঙ্গি অস্বাভাবিক মনে হলে তিনি তৎক্ষণাৎ উঠে দাঁড়ান।

ওই ছাত্রী আরও অভিযোগে আরও বলেন, ওই শিক্ষক তখন নিজের আসন ছেড়ে তাঁর কাছে উঠে আসেন এবং তাঁর গায়ে হাত দেন। ঘটনার আকস্মিকতায় কিছু বুঝে উঠতে না পেরে তিনি (ছাত্রী) ভয়ে ওই কক্ষ থেকে দৌড়ে পালিয়ে যান। এরপর তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যানটিনে কিছু সময় অবস্থান করেন। কিছু সময় পর ওই শিক্ষক তাঁকে ফোন করে দুপুরের খাবার অথবা হালকা নাশতা বা চা খাওয়ার প্রস্তাব দেন। তখনো এ বিষয়ে (হয়রানি) কাউকে কিছু না বলতে বারবার সতর্ক করেন। মানসিক ট্রমা থেকে বের হতে না পেরে প্রচণ্ড ভয়ে তিনি গ্রামের বাড়িতে চলে যান। এ কারণে তিনি এখন ক্লাসও করছেন না। তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।

স্মারকলিপি দেওয়ার সময় উপস্থিত থাকা এক শিক্ষার্থী প্রথম আলোকে বলেন, বিক্ষোভ শেষে তাঁরা উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দেন। উপাচার্য এর আগে ভুক্তভোগীর মুখ থেকে ঘটনার বিস্তারিত শুনেছেন। তিনি বলেছেন, বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেটের সভায় উত্থাপন করা হবে।

উপাচার্য এ এস এম মাকসুদ কামাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘ভুক্তভোগী ছাত্রী তিন দিন আগে আমার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়ে গেছে। বুধবার তার সহপাঠীরা এসে আরেকটি অভিযোগ দিয়ে গেছে। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করব।’