ছাত্রহত্যার দায় সরকারকে নিতে হবে: উদীচী
বৃষ্টিতে ভিজে গান, কবিতা আর বক্তব্যের মধ্য দিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছে সাংস্কৃতিক শিল্পীগোষ্ঠী উদীচী। বক্তারা বলেছেন, কোটা সংস্কারের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন দমনে অনাকাঙ্ক্ষিত বলপ্রয়োগের ঘটনা কখনোই গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্য কাম্য নয়। ছাত্র হত্যার দায় সরকারকে নিতে হবে।
আজ শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এই প্রতিবাদ সমাবেশে যোগ দিয়েছে অন্য কয়েকটি সংগঠন।
সমাবেশের প্রথম দিকে কোটা আন্দোলন ঘিরে সৃষ্ট সংঘাতে নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। প্রাণহানির ঘটনার প্রতীক হিসেবে সমাবেশের সামনে রাখা ছিল কফিন।
সাংস্কৃতিক শিল্পীগোষ্ঠী উদীচীর কেন্দ্রীয় সংসদের সহসভাপতি মাহমুদ সেলিম বলেন ‘ছাত্র হত্যার দায় সরকারকে নিতে হবে। আমরা বিচারব্যবস্থার চেহারা দেখেছি। আপনি বিচারক ঠিক করে দিলে হবে না। আমরা জাতিসংঘের অধীনে তদন্ত ও বিচার হচ্ছে দেখতে চাই।’
উদীচীর কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি অধ্যাপক বদিউর রহমান বলেন, ‘আমরা আজ বিচিত্র একসময়ে দাঁড়িয়ে। যখন আমরা হারিয়েছি আমাদের সন্তানদের, বন্ধুদের।’ কোটা আন্দোলনের মতো একটি আন্দোলন সরকারের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ব্যর্থতার দায়ে বীভৎস অবস্থায় চলে গিয়েছে উল্লেখ করে বদিউর রহমান বলেন, ‘যা কিছু ঘটেছে, এর দায় কেউ এড়াতে পারে না। এর দায় সরকারের ওপর বর্তায়।’
সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দের পরিচালনায় আয়োজিত এই সমাবেশে অংশ নিয়ে অন্যান্য সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের সদস্যরাও বিক্ষোভ করেন। অমিত রঞ্জন দে বলেন, ‘সরকার এক একটি দুর্নীতির ঘটনা, আন্দোলন ধামাচাপা দিতে আরেকটি ঘটনা সামনে নিয়ে আসছে। দেশে শিক্ষকদের আন্দোলন চলছিল, দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলন, চা-শ্রমিক, পোশাকশ্রমিক সব খাতে কিছু না কিছু আন্দোলন চলছিল। এসব থেকে সব নজর ঘুরে যায় কোটা সংস্কার আন্দোলনের ঘটনায়।’
সমাবেশে অংশ নেওয়া চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, খেলাঘরের প্রতিনিধিরা বলেন এই আন্দোলনের শিশুদের নিরাপত্তাহীনতা কথা। তাঁরা আশঙ্কা প্রকাশ করেন, ক্ষতিগ্রস্ত যুবসমাজের এই ক্ষত সারতে বহুদিন সময় লাগবে। তাঁরা বলেন, ‘কোটার নামে আমাদের দেশে একটি গোষ্ঠী তৈরি করা হচ্ছে।’
বাংলাদেশ যুব ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘কর্মসংস্থানের দুর্নীতি-ক্ষোভ জমা ছিল এ দেশের যুবকদের মধ্যে। সেই ক্ষোভ ফুঁসে উঠেছিল কোটা আন্দোলনে, কিন্তু সেটা ছিল নিরীহ আন্দোলন। কিন্তু এমন সময় প্রধানমন্ত্রীর উসকানিমূলক বক্তব্যই পরিস্থিতি সেই আন্দোলনকে ভিন্ন দিকে নিয়ে যায়। একটা নিঃসঙ্গ ভবিষ্যৎ প্রজন্ম তৈরি হচ্ছে, এর দায় প্রধানমন্ত্রীকে নিতে হবে।’