ভারতের হিন্দন বিমানঘাঁটিতে পৌঁছালেন দেশত্যাগী শেখ হাসিনা
বাংলাদেশের পদত্যাগী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে ভারতের বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যম জল্পনামুখর হলেও তাঁর অবস্থান নিয়ে ভারত সরকার কোনো মন্তব্য করেনি। কাজেই কীভাবে তিনি আজ সোমবার দুপুরে দেশ ছাড়লেন, তা মোটামুটি জানা গেলেও ভারতের কোন প্রান্তে তিনি এলেন, সে বিষয়ে কোনো মহল নির্দিষ্ট করে কিছু জানায়নি। ফলে দিনভর চলেছে অন্তহীন জল্পনা।
আজ বিকেল–সন্ধ্যা নাগাদ ভারতের গণমাধ্যমে খবর বেরোয়, শেখ হাসিনার বিমান দিল্লির উপকণ্ঠে উত্তর প্রদেশের গাজিয়াবাদের কাছে হিন্দন বিমানঘাঁটিতে অবতরণ করেছে। হিন্দন নদীর ধারে ভারতীয় বিমানবাহিনীর এই ঘাঁটি থেকে তিনি কোথায় যাবেন, সেই বিষয়টিও অজানা। জল্পনা একটাই, হাসিনা ও তাঁর বোন রেহানার পরবর্তী গন্তব্য নাকি লন্ডন।
ভারতের গণমাধ্যম দ্য হিন্দু শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে খবরে বলা হয়েছে, যুক্তরাজ্যে শেখ হাসিনা রাজনৈতিক আশ্রয় চাইতে পারেন। তাঁর সঙ্গে থাকা বোন শেখ রেহানা যুক্তরাজ্যের নাগরিক।
কোটা আন্দোলন নিয়ে ভারত সরকার বেশ কিছুদিন পর সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের উত্তরে শুধু জানিয়েছিল, সেখানে যা চলছে, তা সে দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এক সপ্তাহ পর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওই একই মন্তব্য করে বলেছিলেন, তাঁদের আশা, দ্রুত শান্তি ফিরবে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।
গতকাল রোববার বিকেল থেকেই বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে বহু প্রশ্ন করা হয়। আজ সোমবার সকাল থেকে প্রশ্নের সংখ্যা বেড়ে চলে। কিন্তু সরকার একটি মন্তব্যও করেনি। দুপুরে ঢাকা থেকে যখন খবর আসে, হেলিকপ্টারে চেপে হাসিনা সপরিবার দেশ ছেড়েছেন, তখন থেকেই সামাজিক ও গণমাধ্যমে প্রচার হতে থাকে নানা অসমর্থিত খবর।
এসব খবরের মধ্যে রয়েছে—১. হাসিনা ঢাকা থেকে আগরতলা গেছেন। ২. তিনি ঢাকা থেকে কলকাতা গেছেন। ৩. ভারত থেকে হাসিনা বিশেষ বিমানে দিল্লি রওনা হয়েছেন। ৪. হেলিকপ্টারে চেপেই তিনি দিল্লি রওনা হয়েছেন। ৫. দিল্লি বিমানবন্দরে বিশেষ নিরাপত্তাব্যবস্থার বন্দোবস্ত করা হয়েছে।
সর্বশেষ খবর হচ্ছে, শেখ হাসিনার বিমান উত্তর প্রদেশের হিন্দন বিমানঘাঁটিতে নেমেছে। এখান থেকে তিনি লন্ডন রওনা হবেন।
ভারত কেন এমন নীরবতা পালন করছে, সেটা নিয়েও জল্পনা অন্তহীন। এই নীরবতার মধ্য দিয়ে এটাই বোঝা যাচ্ছে, পরিস্থিতি অনুধাবন না করে ভারত কোনো মন্তব্য করতে চায় না। ভারতবিরোধী মনোভাব এই মুহূর্তে বাংলাদেশে তীব্র। ভারত এমন কিছু বলতে বা করতে চায় না, যাতে হিতে বিপরীত হয়।