চাকরিতে পুনর্বহাল ও কারাবন্দী বিডিআর সদস্যদের মুক্তি দাবিতে মানববন্ধন
চাকরিচ্যুত ব্যক্তিদের চাকরিতে পুনর্বহাল ও নিরীহ কারাবন্দী বিডিআর (বর্তমান বিজিবি) সদস্যদের মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন হয়েছে। আজ শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে ‘বিডিআর কল্যাণ পরিষদ’-এর ব্যানারে এই মানববন্ধন করা হয়।
মানববন্ধনে বিডিআর কল্যাণ পরিষদের সমন্বয়ক কামাল হোসেন বলেন, ছাত্র ও সাধারণ মানুষ সংগ্রামের মাধ্যমে স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটিয়েছেন। ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি শেখ হাসিনা এ দেশের সেনা কর্মকর্তাদের হত্যার নীলনকশা করেন। সেনা কর্মকর্তাদের খুন ও গুমের পর এ দেশের হাজার হাজার নিরীহ বিডিআর সদস্যকে মিথ্যা মামলার মাধ্যমে সাজা দেওয়া হয়। যাঁদের মধ্যে এখনো অনেক বিডিআর জওয়ান বিনা বিচারে জেলখানায় মানবেতর জীবন যাপন করছেন। অনেকেই নিখোঁজ আছেন। সরকারি হিসাব অনুযায়ী, ১৮ হাজার ৫২০ জন বিডিআর সদস্যকে বিনা বিচারে কারাবরণ করতে হয়েছে।
নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে কামাল হোসেন বলেন, ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি হত্যা মামলায় যাঁরা জড়িত, তাঁদের খুঁজে আইনের আওতায় এনে বিচার করতে হবে। আর যাঁরা নিরীহ ও নিরপরাধ বিডিআর সদস্য চাকরিচ্যুত হয়েছেন, তাঁদের চাকরিতে পুনর্বহাল করতে হবে। আর যাঁরা এখনো কারাবন্দী আছেন, তাঁদেরও জেল থেকে মুক্তি দিয়ে চাকরি ফিরিয়ে দিতে হবে।
মানববন্ধনে উপস্থিত এক নারী নিজেকে একজন বিডিআর সদস্যের স্ত্রী পরিচয় দিয়ে বলেন, ‘আমার স্বামী ঢাকা পিলখানায় কর্মরত ছিলেন। ওই ঘটনার পর তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে বারবার রিমান্ডে নেওয়ার পরও তাঁর কোনো দোষ পাওয়া যায়নি। তিনি আদালতের মাধ্যমে নির্দোষ প্রমাণিত হন। এরপরও তাঁকে এখনো জেল খাটতে হচ্ছে। আমি আমার স্বামীর মুক্তি চাই এবং চাকরিতে পুনর্বহাল চাই।’
মানববন্ধনে কয়েক শ চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্য ও তাঁদের স্বজনেরা উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা বিভিন্ন দাবি লেখা প্ল্যাকার্ড নিয়ে মানববন্ধনে অংশ নেন। এসব প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল, ‘খালাস পেয়েও ১৬ বছরে মুক্তি মেলেনি’, ‘স্বামী ছাড়া সন্তানদের নিয়ে আর কত দিনের অপেক্ষা’, ‘১৯ দিন চাকরির বিনিময় ১৬ বছর জেল’, ‘আমি বৃদ্ধ মা আর কত কাঁদব’, ‘একজন অসহায় মায়ের কান্না শোনার কি কেউ নেই’ ইত্যাদি।
মানববন্ধন শেষে জাদুঘরের সামনে থেকে মিছিল নিয়ে জাতীয় প্রেসক্লাব পর্যন্ত যান কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া ব্যক্তিরা। এ সময় তাঁরা ‘বিডিআরের চাকরি/পুনর্বহাল চাই’, ‘সব বন্দী জওয়ানদের মুক্তি/ দিতে হবে দিতে হবে’ ইত্যাদি স্লোগান দেন। মানববন্ধনে বিডিআর কল্যাণ পরিষদের সমন্বয়ক মনির হোসেন, আবদুল কাইয়ুম, মিজানুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।