হিযবুত তাহরীরের শীর্ষস্থানীয় নেতা গ্রেপ্তার
হিযবুত তাহরীরের অন্যতম শীর্ষ নেতা তৌহিদুর রহমান ওরফে তৌহিদ ওরফে সিফাতকে (২৯) গ্রেপ্তার করার কথা জানিয়েছে পুলিশ। বুধবার কক্সবাজার এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) বিশেষায়িত কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) বলেছে, সাম্প্রতিক সময়ে সরকার ও দেশবিরোধী পোস্টার ও বয়ান প্রভৃতি কার্যক্রমে তিনি প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন। তা ছাড়া অনলাইন সম্মেলনগুলোতে তিনি প্রধান সমন্বয়ক ও ক্ষেত্রবিশেষে প্রধান বক্তা হিসেবে ভূমিকা পালন করে আসছিলেন।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। এতে সিটিটিসির প্রধান ও ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, তৌহিদ রাজধানীর শনির আখড়া এলাকার শুভেচ্ছা টাওয়ার থাকেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তৌহিদ বলেছেন, তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করে বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং করছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় ২০১১ সালে দুজন বন্ধুর মাধ্যমে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন হিযবুত তাহরীর সম্পর্কে প্রথম জানতে পারেন এবং ওই সংগঠনে যোগ দেন।
২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে হিযবুত তাহরীর করার অভিযোগে রাজধানীর হাজারীবাগ থানায় করা একটি মামলায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাঁকে গ্রেপ্তার করে। চার মাস কারাগারে থাকার পর জামিনে মুক্ত হয়ে তিনি আবারও হিযবুত তাহরীরের সদস্য হিসেবে কার্যক্রম শুরু করেন।
সিটিটিসির প্রধান আসাদুজ্জামান বলেন, ২০১৭ সালে আরও সক্রিয়ভাবে সংগঠনের কার্যক্রম শুরু করে সংগঠনটি অন্যতম শীর্ষ স্থান দখল করেন তৌহিদুর রহমান।
বিশেষ অ্যাপের মাধ্যমে অন্য সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেন। ফলে বেশির ভাগ সময় তাঁরা ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকেন। ২০১৯ সালের এপ্রিল মাসে পুনরায় পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে। জামিনে মুক্ত হয়ে তিনি আবার হিযবুত তাহরীরের সাংগঠনিক কার্যক্রমে সক্রিয় হন। এর ধারাবাহিকতায় গোপনে ও প্রকাশ্যে তিনি কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে সমন্বয় করে তাঁদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছিলেন। অনলাইন সম্মেলনে অংশ নেওয়ার ঘটনায় তাঁর বিরুদ্ধে রমনা থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করা হয়েছে। সেই মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
পুলিশ কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বলেন, হিযবুত তাহরীর বাংলাদেশ বা উলাইয়া বাংলাদেশ সংগঠনটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে দেশে জঙ্গি ও মৌলবাদী কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিল। তারা প্রচলিত সমাজ ও রাষ্ট্রব্যবস্থাকে বিশ্বাস করে না এবং দেশের প্রচলিত সমাজ ও রাষ্ট্রব্যবস্থাকে অমান্য করে যেকোনো বড় ধরনের অঘটন ঘটাতে পারে। এর ভিত্তিতে ২০০৯ সালে সরকার সংগঠনটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।