স্বজনদের কবরে মোম জ্বালানোর রীতি, চট্টগ্রামে যেভাবে পালিত হয় অল সোলস ডে
সারি সারি সমাধিতে জ্বলছে মোমবাতি। আলোকিত সমগ্র কবরস্থান। প্রিয়জনের সমাধির সামনে দাঁড়িয়ে নীরবে প্রার্থনা করছেন স্বজনেরা। আজ শনিবার সন্ধ্যায় এমন দৃশ্য দেখা গেল চট্টগ্রামের পাথরঘাটার পবিত্র জপমালার রানি গির্জার কবরস্থানে। অল সোলস ডে উপলক্ষে মৃত স্বজনদের আত্মার শান্তি কামনা করে তাঁদের কবরে মোমবাতি জ্বালিয়েছেন খ্রিষ্ট সম্প্রদায়ের মানুষেরা। পাথরঘাটার পাশাপাশি আজ নগরের ক্যাথলিক খ্রিষ্টান অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে এই দিবস পালিত হয়।
এই দিনে খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীরা প্রিয়জনের সমাধিতে মোমবাতি জ্বালিয়ে, ফুলের পাপড়ি ছড়িয়ে, পবিত্র জল ছিটান। পাশাপাশি বিভিন্ন গির্জায় অনুষ্ঠিত হয় প্রার্থনা। পবিত্র জপমালা রানি গির্জায়ও বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হয় এই উপলক্ষে।
মৃত আত্মীয়স্বজনের স্মরণে আজ সন্ধ্যা থেকেই নগরের বিভিন্ন ধর্মপল্লিতে অবস্থিত ক্যাথলিক খ্রিষ্ট সম্প্রদায়ের লোকজন তাঁদের আত্মীয়স্বজনের কবরগুলোতে মোমবাতি জ্বালিয়েছেন। পাথরঘাটা কবরস্থানে আসা লোকজন জানান, অল সোলস ডে প্রতিবছরই পালিত হয়ে আসছে। এটি চট্টগ্রামের ঐতিহ্যের অন্তর্গত হয়ে উঠেছে এখন। এটি খ্রিষ্ট সম্প্রদায়ের মানুষদের জন্য বিশেষ দিন।
বিশেষ প্রার্থনায় যোগ দিতে আসা লোকজন জানান, মৃত স্বজনদের স্মরণে খ্রিষ্ট সম্প্রদায়ের লোকজন প্রতিবছর ২ নভেম্বর গির্জা ও সমাধিতে জড়ো হন। মোম জ্বালিয়ে প্রিয়জনের কবরের পাশে দাঁড়িয়ে অশ্রুসিক্ত চোখে প্রার্থনা করেন তাঁরা। এ সময় ফুল ছিটিয়ে দেন স্বজনেরা।
শেষ বিকেলে প্রার্থনার মধ্য দিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠান। জ্বালানো হয় আগরবাতি। সূর্য অস্ত যাওয়ার পর সন্ধ্যার আঁধারে কবরগুলো স্বজনদের জ্বালানো প্রদীপের আলোয় আলোকিত হয়ে ওঠে। কবরে শ্রদ্ধা নিবেদনের ফাঁকে ফাঁকে ক্রুশবিদ্ধ যিশুর প্রতিকৃতির সামনেও শ্রদ্ধার প্রদীপ জ্বালানো হয়।
খ্রিষ্টানদের বিশ্বাস, এই দিনে প্রয়াতদের জন্য প্রার্থনা করলে তাঁদের আত্মা শান্তি পায়। সে জন্য মোমবাতির আলো জ্বালানো, দুস্থদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা, বিশেষ প্রার্থনা এবং সমাধিক্ষেত্রে ফুল রাখার রীতি রয়েছে।