২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

এক যুগ্ম সচিবের সামনে জেসমিনকে আটক ও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়: র‍্যাব

র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন
ফাইল ছবি

র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেছেন, রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের পরিচালক (যুগ্ম সচিব) এনামুল হকের অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁর সামনেই ভূমি কার্যালয়ের অফিস সহকারী সুলতানা জেসমিনকে (৪৫) আটক করা হয়েছিল। এনামুল হকসহ কয়েকজনের সামনেই জেসমিনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি দোষ স্বীকার করেন। জেসমিনকে থানায় নিয়ে যাওয়ার সময় তিনি অসুস্থ বোধ করেন। এ সময় এনামুলও উপস্থিত ছিলেন।

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‍্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আজ মঙ্গলবার দুপুরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন শেষে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে খন্দকার আল মঈন এসব কথা বলেন।

জেসমিন নওগাঁ সদর উপজেলার চণ্ডীপুর ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয়ে অফিস সহকারী পদে চাকরি করতেন। এনামুল হকের অভিযোগের ভিত্তিতে গত বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নওগাঁ শহরের মুক্তির মোড় থেকে জেসমিনকে আটক করে র‍্যাব। গত শুক্রবার সকালে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

আরও পড়ুন

র‍্যাব জানায়, এনামুল হকের অভিযোগ, তাঁর ফেসবুক আইডি হ্যাক করা হয়েছে। তাঁর নামে ভুয়া ফেসবুক আইডি খোলা হয়েছে। এভাবে কিছু প্রতারক তাঁর নাম-পদবি ব্যবহার করে চাকরি দেওয়ার কথা বলে মানুষের কাছ থেকে টাকাপয়সা হাতিয়ে নিয়েছেন।

খন্দকার আল মঈন বলেন, ১৯ ও ২০ মার্চ এনামুল হকের নাম-পদবি ব্যবহার করে প্রতারণা করা হয়েছে বলে তাঁর (এনামুল) কাছে তথ্য আসে। তিনি জানতে পারেন, এই প্রতারণার সঙ্গে আল আমিন নামের এক ব্যক্তি জড়িত। তাঁর সহযোগী হিসেবে জেসমিনের জড়িত থাকার তথ্য পান তিনি। ২২ মার্চ অফিসে যাওয়ার সময় তিনি র‍্যাবের টহল টিমের কাছে এ বিষয়ে অভিযোগ করেন। এই অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁর সামনে জেসমিনকে আটক করে র‍্যাব। আটকের সময় ঘটনাস্থলে অন্য লোকজনও ছিল। সবার সামনেই জেসমিনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। র‍্যাবের দুজন নারী সদস্য তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তিনি ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা অকপটে স্বীকার করেন। তখন এনামুল হকও উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন

খন্দকার আল মঈন আরও বলেন, জেসমিনের মুঠোফোনে থাকা তথ্য কাছের কম্পিউটারের দোকানে প্রিন্ট করা হয়। পরে তাঁকে নিয়ে থানায় যাওয়ার সময় তিনি অসুস্থ বোধ করেন। এ সময় এনামুল হকও উপস্থিত ছিলেন। তাঁকে নওগাঁ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায় র‍্যাব। তখন তাঁর আত্মীয়স্বজন ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) উপস্থিত ছিলেন। সবার উপস্থিতিতে চিকিৎসক তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করতে বলেন। সেখানে সিটি স্ক্যানের পর চিকিৎসকেরা দেখতে পান, তিনি স্ট্রোক করেছেন।

এ বিষয়ে জানতে আজ বিকেল সাড়ে চারটার দিকে যুগ্ম সচিব এনামুল হকের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হয়। তবে তিনি ফোন ধরেননি।

আরও পড়ুন

জেসমিনের মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করেছে র‍্যাব। গতকাল সোমবার র‍্যাব সদর দপ্তর এই তদন্ত কমিটি গঠন করে। র‍্যাবের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি ইতিমধ্যে কাজ শুরু করে দিয়েছে। তদন্তে র‍্যাবের কারও বিরুদ্ধে গাফিলতির প্রমাণ পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

স্বজনদের অভিযোগ, আটক হওয়ার আগে জেসমিন সুস্থ ছিলেন। র‍্যাবের হেফাজতে নির্যাতনের কারণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। জেসমিনের মৃত্যুর ঘটনায় উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে কয়েকটি মানবাধিকার সংগঠন। জেসমিনের ময়নাতদন্ত (পোস্টমর্টেম) প্রতিবেদনসহ সংশ্লিষ্ট নথিপত্র দেখতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন