রাজনীতিতে ভুল তথ্য ছড়ানোর প্রবণতা কমেছে, খেলায় বেড়েছে

ডিসমিসল্যাবের প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে আগের বছরের চতুর্থ প্রান্তিকের চেয়ে ভুল তথ্য কমেছেছবি: রয়টার্স

চলতি বছরের শুরুতে জাতীয় নির্বাচনের পর দেশে রাজনৈতিক উন্মাদনা কমে আসে। যার প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়ানো ভুল তথ্যের ক্ষেত্রেও। যদিও চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে ভুলের সংখ্যার দিক থেকে তা ওপরেই আছে। এই সময়ে খেলা ও ধর্মীয় বিষয়ে ভুল তথ্য ছড়ানোর প্রবণতা বেড়েছে। অন্যদিকে ভিডিও চিত্রের মাধ্যমে ভুল তথ্য বেশি ছড়িয়েছে।

তথ্যব্যবস্থায় প্রযুক্তির প্রভাব নিয়ে গবেষণাকারী প্রতিষ্ঠান ডিজিটালি রাইটের তথ্য যাচাইয়ের উদ্যোগ ডিসমিসল্যাব এক প্রতিবেদনে এ কথা জানিয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার ভুল তথ্যের প্রবণতা নিয়ে ওই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত বছরের প্রথম প্রান্তিকে বাংলাদেশি আটটি ফ্যাক্ট-চেকিং ওয়েবসাইটের ফ্যাক্ট-চেক প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে এ প্রতিবেদন তৈরি করেছে ডিসমিসল্যাব।

ডিসমিসল্যাবের প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে ডিসমিসল্যাব ১ হাজার ২৮টি ফ্যাক্ট-চেক রিপোর্ট বিবেচনায় নিয়েছে। তাতে ভুল তথ্যের ৬৫৬টি একক বিষয় পেয়েছে। যা আগের বছরের চতুর্থ প্রান্তিকের (অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর ২০২৩) চেয়ে ৫ শতাংশ কম। সবচেয়ে বেশি ভুল তথ্য ছড়িয়েছে রাজনীতিতে (২৫ শতাংশ)। এর পরে আছে খেলা (১৭ শতাংশ), ধর্মীয় বিষয় (৯ শতাংশ) ও বিনোদনে (৬ শতাংশ)।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ভোট গ্রহণ করা হয়। নির্বাচনের পর রাজনৈতিক আলোচনা ধীরে ধীরে কমে যায়। ফলে রাজনৈতিক ভুল তথ্য ছড়ানো কমে আসে। তবে তা শতাংশের হিসাবে কমলেও সংখ্যার দিক থেকে ওপরেই আছে। ২০২৩ সালে শেষ প্রান্তিক ভুল তথ্যের মধ্যে ৪৫ শতাংশ ছিল রাজনৈতিক বিষয়। চলতি বছর প্রথম প্রান্তিকে তা হয়েছে ২৫ শতাংশ।

চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে বিপিএল এবং আইপিএলের মতো ক্রিকেট–সংক্রান্ত ইভেন্ট থাকায় খেলা–সম্পর্কিত ভুল তথ্য ছড়ায় প্রায় ১৭ শতাংশ। যা আগের প্রান্তিকে ছিল ১৪ শতাংশ। মার্চে সবচেয়ে বেশি ৬২টি ভুল তথ্য ছিল খেলাধুলার।

গত ২২ জানুয়ারি ভারতের অযোধ্যায় রামমন্দির উদ্বোধন করা হয়। বছরের প্রথম প্রান্তিকে ধর্ম-সম্পর্কিত যেসব ভুল তথ্য ছড়িয়েছে, সেগুলোর অনেকগুলোই এই রামমন্দির ঘিরে ছিল। চলতি প্রান্তিকে ধর্মীয় বিষয় ভুল তথ্য ছড়িয়েছে ৯ দশমিক ১ শতাংশ।

ডিসমিসল্যাব বলছে, বাংলাদেশে ভুল তথ্য প্রাথমিকভাবে ভিডিও এবং ছবির মাধ্যমে বেশি ছড়ায়। সবচেয়ে বেশি ভুল তথ্য ছড়ানো হয় ভিডিওর মাধ্যমে। প্রথম প্রান্তিকে বাংলাদেশে ভুল তথ্যের ভিডিও ফেসবুকের মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি (৪০ শতাংশ) ছড়িয়েছে। এরপর আছে ইউটিউবে (৩০ শতাংশ) এবং টিকটকে (২৯ শতাংশ)।

ছবির মাধ্যমে ভুল তথ্য ছড়ানো আগের প্রান্তিকের চেয়ে ৩০ শতাংশ বেড়েছে। যদিও ফটো কার্ডের মাধ্যমে ভুল ছড়ানো কমেছে ৪৭ শতাংশ। ডিসমিসল্যাব বলছে, ফটো কার্ড বা গ্রাফিক কার্ড সাধারণত রাজনৈতিক ভুল তথ্য ছড়ানোর জন্য ব্যবহার করা হয়।