অবৈধ সম্পদ অর্জন অভিযোগে নসরুল হামিদ ও তাঁর স্ত্রী-ছেলের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

সাবেক বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদফাইল ছবি

অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং ৯৮টি ব্যাংক হিসাবে অস্বাভাবিক লেনদেনের অভিযোগে সাবেক বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ ছাড়া জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তাঁর স্ত্রী সীমা হামিদ ও ছেলে জারিফ হামিদের নামেও পৃথক মামলা করেছে দুদক। এসব মামলায় তাঁকেও আসামি করা হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আক্তার হোসেন রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদক কার্যালয়ের সামনে এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।

আক্তার হোসেন বলেন, দুর্নীতি ও ঘুষের মাধ্যমে পাওয়া অর্থ বা সম্পত্তির অবৈধ উৎস গোপন করে হস্তান্তর, স্থানান্তর ও রূপান্তর করায় দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪–এর ২৭(১) ধারা, মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২–এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারা এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায়  নসরুল হামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে।

আরেক মামলায় নসরুল হামিদ ও তাঁর ছেলে জারিফ হামিদকে আসামি করা হয়েছে বলে জানান দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ)। তিনি বলেন, জারিফের বিরুদ্ধে ২০ কোটি ৮৭ লাখ ৬৬ হাজার টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। পাশাপাশি তাঁর ২০টি ব্যাংক হিসাবে ২৭ কোটি ৭১ লাখ টাকা জমা ও ১৭ কোটি ৪১ লাখ টাকা উত্তোলন করা হয়েছে।

মামলার এজাহারে এই লেনদেনকে অস্বাভাবিক ও সন্দেহজনক উল্লেখ করে মানিলন্ডারিংয়ের অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। নসরুল হামিদের প্রভাব ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে তার ছেলে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের মালিকানা অর্জন করেছেন বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।

এ ছাড়া অন্য একটি মামলার আসামি নসরুল হামিদ ও তাঁর স্ত্রী সীমা হামিদ। ওই মামলার এজাহারে সীমা হামিদের বিরুদ্ধে ৬ কোটি ৯৪ লাখ ৩৩ হাজার টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। পাশাপাশি তাঁর ২০টি ব্যাংক হিসাবে ১২ কোটি ৭৭ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৯ টাকা জমা ও ১১ কোটি ১৮ লাখ ৪৯ হাজার ৮১৮ টাকা উত্তোলন হয়েছে।

এজাহারে এই লেনদেনকে অস্বাভাবিক ও সন্দেহজনক উল্লেখ করে মানিলন্ডারিং সংক্রান্ত অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। নসরুল হামিদের প্রভাব ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে তাঁর স্ত্রী জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের মালিকানা অর্জন করেছেন বলেও এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।

গত ২২ আগস্ট নসরুল হামিদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানে নামে দুদক। ওইদিন তাঁর প্রতিষ্ঠান হামিদ গ্রুপে অভিযান চালায় যৌথবাহিনী। ঢাকা জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে পুলিশ, র‌্যাব ও সেনাবাহিনী এ অভিযান চালায়। এ সময় ‘প্রিয় প্রাঙ্গণ’ নামে ভবনের ভেতর থেকে বেশ কয়েকটি ভল্টে থাকা নগদ অর্থ ও বৈদেশিক মুদ্রা (প্রায় ১০ লাখ টাকা ও ২০০ তুর্কি মুদ্রা) এবং অস্ত্র-গুলিসহ অন্যান্য সামগ্রী জব্দ করা হয়। ৫ আগস্ট ছাত্র–জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে আত্মগোপনে আছেন নসরুল হামিদ।