বঙ্গবাজারে আগুন: ৭০০ কোটি টাকা চায় দোকান মালিক সমিতি
রাজধানীর বঙ্গবাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ৭০০ কোটি টাকা থোক বরাদ্দ চেয়েছে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি। মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবি জানানো হয়েছে।
সমিতির সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন ও মহাসচিব মো. জহিরুল হক স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তিনটি দাবি জানানো হয়। দাবিগুলো হলো, প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের জন্য ৭০০ কোটি টাকা থোক বরাদ্দ, তদন্ত কমিটি গঠন করে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা যাতে নিজ নিজ দোকান ফিরে পান, সে ব্যবস্থা গ্রহণ।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বঙ্গবাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় পাঁচ-ছয় হাজার দোকান পুড়ে সম্পূর্ণ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। দোকান মালিক সমিতির নেতারা ইতিমধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন। একই সঙ্গে তাঁদের জন্য সরকারের কাছে এ তিনটি দাবি জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার সকাল ৬টা ১০ মিনিটে বঙ্গবাজারে পোশাকের দোকানে আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের ৪৮টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। পাশাপাশি আগুন নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনীর সম্মিলিত সাহায্যকারী দল, বিমানবাহিনীর সাহায্যকারী দল ও একটি হেলিকপ্টার কাজ করে। দুপুর ১২টা ৩৬ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে বলে জানান ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুর রহমান বলেছেন, আগুনে প্রায় পাঁচ হাজার দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আর টাকাপয়সার হিসাবে ব্যবসায়িক ক্ষতির অঙ্ক এখনো জানা যায়নি।
ঈদের আগে এই অগ্নিকাণ্ডে দোকানিরা সর্বস্বান্ত হয়েছেন। কারণ, ঈদ সামনে রেখে বিক্রির জন্য প্রচুর পোশাক দোকানগুলোতে তোলা হয়েছিল। এ ছাড়া আগুনে পুড়েছে দোকানে রাখা অনেক ব্যবসায়ীর নগদ টাকাও।
ব্যবসায়ীদের মনে এখন আরেক শঙ্কা ভর করেছে, পুড়ে যাওয়া দোকানের জায়গায় তাঁরা নতুন করে ব্যবসা শুরু করতে পারবেন কি না। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা বলেছেন, আগে বিভিন্ন মার্কেটে আগুন লাগার পর এমন দেখা গেছে প্রকৃত দোকানিরা আর দোকান ফেরত পাননি, অন্য কেউ তা দখল করে নিয়েছেন। এবারও অনেকের বেলায় এমন হতে পারে বলে আশঙ্কা তাঁদের।
এ পরিপ্রেক্ষিতে দোকান মালিক সমিতি ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা যাতে নিজ নিজ দোকান ফিরে পান, সে ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে।
এর আগে দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেছিলেন, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ব্যবসায়ীরা নিঃস্ব হয়ে গেছেন। তাঁদের সম্পদ বলতে অবশিষ্ট আর কিছু নেই। এখন উচিত হবে, সরকারি পর্যায় থেকে দ্রুত বরাদ্দ দিয়ে এসব ব্যবসায়ীকে পুনর্বাসন করা।
হেলাল উদ্দিন আরও বলেন, ব্যবসায়ীদের মনে সবচেয়ে বড় ভয় হচ্ছে দোকানের জায়গা তাঁরা আবার ফিরে পাবেন কি না। এই জায়গা ফিরে না পেলে তাঁদের ঘুরে দাঁড়ানোর সব পথ বন্ধ হয়ে যাবে।