ওষুধ খাইয়ে যাত্রীদের সর্বস্ব কেড়ে নিতেন তাঁরা
যাত্রী সেজে গণপরিবহনে ওঠেন পরিচিত দু–তিনজন মানুষ। তাঁদের একজন ভেষজ ওষুধের নামে চেতনানাশক ওষুধ বিক্রি করেন। সেসব ওষুধ খেয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়লে যাত্রীর টাকা ও মুঠোফোন কেড়ে নেন দলের অপর সদস্যরা। এই দলের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) আজ সোমবার তাঁদের সম্পর্কে এসব তথ্য জানায়।
গ্রেপ্তার তিনজন হলেন মহিন উদ্দিন, আনোয়ার হোসেন ও রফিকুল ইসলাম। চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড থানায় অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে এক ব্যক্তির মৃত্যুর মামলা তদন্ত করতে গিয়ে চক্রটির সন্ধান পায় পিবিআই। গতকাল রোববার রাতে নগরের হালিশহর ও পাহাড়তলী এলাকায় অভিযান চালিয়ে চক্রের সদস্যদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
পিবিআই চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, সীতাকুণ্ড থানার একটি মামলার ছায়া তদন্ত করতে গিয়ে পিবিআই এই অজ্ঞান পার্টির সন্ধান পায়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, নগরের বিভিন্ন গণপরিবহনে যাত্রীবেশে উঠে চেতনানাশক ওষুধ খাইয়ে যাত্রীদের মালামাল নিয়ে যান তাঁরা। যৌন উত্তেজক বড়ি বলে কৌশলে বাসযাত্রীদের চেতনানাশক বড়ি খাওয়ানো হতো।
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড থেকে গত ২৮ সেপ্টেম্বর বিকেলে নগরের ফিশারিঘাটে মাছ কিনতে আসেন আবু সৈয়দ নামের এক ব্যক্তি। কেনাকাটা শেষে রাতে অলংকার মোড় থেকে একটি বাসে করে বাড়ি যাওয়ার জন্য রওনা হন। ওই দিন রাত আটটার দিকে স্ত্রীর সঙ্গে সর্বশেষ কথা হয় তাঁর। কিন্তু এর পর থেকে তাঁর মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। রাত সাড়ে ১০টার দিকে সীতাকুণ্ডের বড় দারোগারহাট এলাকায় বাসের মধ্যে আবু সৈয়দকে অজ্ঞান অবস্থায় পাওয়া যায়। পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিন দিন পর তিনি মারা যান। এ ঘটনায় সীতাকুণ্ড থানায় মামলা হয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই চট্টগ্রাম জেলা উপপরিদর্শক (এসআই) শাহাদাত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, গ্রেপ্তার অজ্ঞান পার্টির সদস্যদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে নিহত আবু সৈয়দের মুঠোফোনটি উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া ঘটনায় ব্যবহৃত হওয়া বাসটিকেও জব্দ করা হয়েছে।