১১ ঘণ্টার বেশি সময় পর চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে যান চলাচল শুরু

চট্টগ্রামের লোহাগাড়া অংশে দীর্ঘ সময় ধরে আটকা পড়ে আছে শত শত যানবাহন। ৩ জুন, রাত ১২টা, ২০২৪ছবি: প্রথম আলো

১১ ঘণ্টারও বেশি সময় পর চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে যান চলাচল শুরু হয়েছে। গতকাল শনিবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে মহাসড়কে যান চলাচল শুরু হয়। এর আগে গতকাল বেলা দুইটার দিকে মহাসড়ক অবরোধ করা হয়।

দোহাজারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খান মুহাম্মদ এরফান বলেন, রাত দুইটার পর থেকে মহাসড়কে যান চলাচল শুরু হয়েছে।

লোহাগাড়া উপজেলার অন্তত পাঁচটি জায়গায় দীর্ঘসময় ধরে মহাসড়ক অবরোধ করে রেখেছিলেন আন্দোলনকারীরা। এ সময় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের এই অংশে অন্তত ১১ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে থাকতে দেখা গেছে।

গতকাল বেলা তিনটা থেকে দিবাগত রাত একটা পর্যন্ত সরেজমিন এসব দৃশ্য দেখা যায়। লোহাগাড়ার ঠাকুরদিঘি, পদুয়া বাজার, খালেকের দোকান, আমিরাবাদ স্টেশন ও আধুনগর বাজার এলাকায় বিক্ষোভকারীদের এ অবস্থান নিতে দেখা গেছে। এর মধ্যে দুটি স্থানে মহাসড়কে আগুন জ্বালিয়ে ও অন্যগুলোয় গাছের গুঁড়ি ফেলে অবরোধের ঘটনা ঘটে।

গতকাল বেলা তিনটায় ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ মিছিল শুরু হলে মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। মহাসড়কের লোহাগাড়া উপজেলার পদুয়া বাজার থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়ে ঠাকুরদিঘি বাজারের দক্ষিণ পাশ পর্যন্ত যায়। পরে বিক্ষোভকারীরা আমিরাবাদ স্টেশনে জড়ো হন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, একপর্যায়ে আমিরাবাদ স্টেশনে ট্রাফিক পুলিশ বক্স ও উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় ভাঙচুর করা হয়। পদুয়া বাজারে বেলা দুইটা থেকে পুলিশ, বিজিবি ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা অবস্থান নিলেও শিক্ষার্থীদের ধাওয়ায় পিছু হটে তারা। এরপর লোহাগাড়া ও সাতকানিয়া উপজেলার সীমান্তবর্তী ঠাকুরদিঘি বাজার থেকে চুনতি বাজার পর্যন্ত মহাসড়কের ১২ কিলোমিটার অংশ বিক্ষোভকারীদের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। তারা মহাসড়কের অন্তত ৫টি স্থানে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন ও স্লোগান দিতে থাকেন।

ব্যস্ততম চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে দীর্ঘ সময় ধরে যান চলাচল বন্ধ থাকায় আটকে পড়া শত শত যানবাহনের যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়েছেন। চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ এলাকার ব্যবসায়ী ইনজামাম নূর আটকা পড়েন আধুনগর বাজারে। গতকাল দিবাগত রাত ১২টার দিকে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘দুপুরে কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রামে উদ্দেশে রওনা দিয়েছি। আমাদের বহনকারী বাস বেলা ৩টায় লোহাগাড়ায় আটকে যায়। দীর্ঘ ৯ ঘণ্টা ধরে এখনো একই জায়গায় আটকে আছি।’

ঢাকার উদ্দেশে রওনা করা একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, বেলা তিনটা থেকে তাঁদের বহনকারী যাত্রীবাহী বাস লোহাগাড়া অংশে আটকা পড়েছিল। পরে রাত সাড়ে ১২টার দিকে ওই বাস আবার কক্সবাজারের দিকে ফিরে যায়।

লোহাগাড়া থানার ওসি রাশেদুল ইসলাম সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, বিনা উসকানিতে বিক্ষোভকারীরা পুলিশের ওপর হামলা করেছে। তারা থানার মধ্যে প্রবেশ করতে চাইলে পুলিশ ফাঁকা গুলি ছোড়ে।