চিন্ময়ের মুক্তির দাবিতে চট্টগ্রামে মিছিলের প্রস্তুতিকালে আটক ৬

চট্টগ্রাম নগরে আটক হওয়া ছয় ব্যক্তিছবি: নগর পুলিশ

সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর মুক্তির দাবিতে চট্টগ্রাম নগরে মিছিলের প্রস্তুতিকালে ছয় ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ। তারা বলছে, আটক ব্যক্তিরা আওয়ামী লীগ-যুবলীগের নেতা-কর্মী।

গতকাল মঙ্গলবার রাতে নগরের পাহাড়তলী সরাইপাড়া এলাকা থেকে এই ছয় ব্যক্তিকে আটক করে পুলিশ। নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) কাজী মো. তারেক আজিজ আজ বুধবার সকালে প্রথম আলোকে এ কথা বলেন।

তারেক আজিজ বলেন, চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের মুক্তির দাবিতে একটি মিছিল বের করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে খবর পাওয়া যায়। পরে পাহাড়তলী থানার পুলিশ অভিযান চালিয়ে ছয়জনকে আটক করে। তাঁরা সবাই আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। তাঁরা চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার থেকে এসে নগরের সরাইপাড়া এলাকায় অবস্থান করছিলেন।

পুলিশের ভাষ্যমতে, আটক ব্যক্তিরা হলেন মো. আবু হেনা (৪২), মো. মোমিনুল ইসলাম (৩৪), মো. ইয়াছিন উল্লাহ (৪৪), মো. মামুনুর রশিদ (৪৮), শহীদ উদ্দিন খান (৪৮) ও আবদুর রহিম (৩২)। তাঁরা চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার বাসিন্দা। তাঁরা আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মী। তাঁরা বেশ কিছুদিন ধরে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সরাইপাড়া ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মো. সাবের আহম্মেদের বাড়িতে অবস্থান করছিলেন।

গতকাল বিকেলে চট্টগ্রামে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও আইনজীবীদের সঙ্গে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর অনুসারীদের সংঘর্ষের সময় এক আইনজীবী নিহত হন। আদালত ভবনের মূল ফটকের সামনে রঙ্গম সিনেমা হল-সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে পুলিশের ১০ সদস্যসহ আহত হন অন্তত ৩৭ জন। আইনজীবী হত্যার প্রতিবাদে আজ চট্টগ্রামের আদালতে কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন আইনজীবীরা।

গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে চট্টগ্রাম আদালতে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেপ্তার চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন নামঞ্জুর করা হয়। এরপর তাঁকে কারাগারে পাঠানোর জন্য প্রিজন ভ্যানে তোলা হলে বিক্ষোভ শুরু করেন তাঁর অনুসারীরা। একপর্যায়ে পুলিশ, বিজিবি লাঠিপেটা করে ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। তখনই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। আদালতের আদেশের আড়াই ঘণ্টা পর বেলা তিনটার দিকে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।

নিহত আইনজীবী সাইফুল ইসলাম ওরফে আলিফ (৩৫) সহকারী সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি) ছিলেন। লোহাগাড়ার চুনতি এলাকার জামাল উদ্দিনের ছেলে তিনি। বিকেল সাড়ে চারটার দিকে তাঁকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

গত সোমবার বিকেলে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে চিন্ময় কৃষ্ণকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গত ৩১ অক্টোবর নগরের চান্দগাঁও মোহরা ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ খান বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় চিন্ময় কৃষ্ণসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে মামলা করেন। পরে ফিরোজ খানকে বিএনপি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।