কক্সবাজারের ছয়টি উপজেলা থেকে বন্যার পানি নামতে শুরু করেছে। এতে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও মানুষের দুর্ভোগ কমেনি। পানিতে ডুবে থাকা অন্তত ৪৫ হাজার ঘরবাড়িতে খাদ্য ও পানীয়জলের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।
ভারী বর্ষণ ও পাহাড় থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে গত বুধবার থেকে ডুবে ছিল জেলার ছয়টি উপজেলার ৯৬ গ্রামের অন্তত দেড় লাখ মানুষ। গত দুই দিন বৃষ্টি না হওয়ায় পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। জমে থাকা পানি ধীরে ধীরে সাগরে নেমে যাচ্ছে। তাতে ক্ষতচিহ্ন ভেসে উঠছে। মানুষের দুর্ভোগ কমেনি। ত্রাণও পৌঁছেনি অনেকে ঘরে।
জেলা প্রশাসক (ভারপ্রাপ্ত) বিভীষণ কান্তি দাশ বলেন, বন্যার্তদের জন্য বরাদ্দকৃত ৮৫ মেট্রিক টন চাল ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। ভারী বর্ষণ ও পাহাড় থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন রামু, ঈদগাঁও, পেকুয়া, চকরিয়া ও কক্সবাজার সদর উপজেলার লাখো মানুষ। পাহাড়ি ঢলের স্রোতে ভেসে রামুতে মারা গেছেন ১০ বছর বয়সী এক শিশুসহ তিনজন। নিখোঁজ রয়েছেন ঈদগড়ের আরেক যুবক। গতকাল শনিবার বিকেল পর্যন্ত তাঁর সন্ধান মেলেনি।
বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে বীজতলা, শাকসবজি ও ধানখেত। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ছয়টি উপজেলাতে ৪০ হাজার একর জমির ধান, শাকসবজি, ফসলের বীজতলা নষ্ট হয়েছে। পানের বরজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ২৩০টির বেশি।
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শতাধিক গ্রামীণ উপসড়ক। বেড়িবাঁধ ভেঙে কক্সবাজার সদর উপজেলার চৌফলদণ্ডী, খুরুশকুল, চকরিয়া, পেকুয়ার শতাধিক মৎস্য খামার ভেসে গেছে। বাঁকখালী নদীর স্রোতে বিলীন হয়েছে রামুর গর্জনিয়া অংশের বেশ কিছু ঘরবাড়ি।
বাঁকখালী ও মাতামুহুরী নদীর পানি কিছুটা কমলেও দুই তীরের কয়েক হাজার ঘরবাড়ি এখনো কয়েক ফুট পানির নিচে ডুবে আছে। ঘরে ঘরে খাদ্য ও পানীয়জলের তীব্র সংকট চলছে। এসব ঘরে কোনো সহায়তা পৌঁছেনি। ঘরে রান্নাবান্নার সুযোগ নেই। শিশু–নারীরা দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।
বাঁকখালী নদীর পানিতে ডুবে আছে রামু ও কক্সবাজার সদর উপজেলার গর্জনিয়া, কচ্ছপিয়া, কাউয়ারখোপ, ফতেখাঁরকুল, ঝিলংজা ইউনিয়নের ১৩টি গ্রামের অন্তত এক হাজার ঘরবাড়ি।
রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাশেদুল ইসলাম বলেন, বন্যার পানিতে রামুর ২৩ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। বেশি ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনের মধ্যে ১০ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করা হচ্ছে।