সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশি বিক্ষোভকারীদের সাজা অন্যায্য: এইচআরডব্লিউ

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)ছবি: এইচআরডব্লিউর ফেসবুক থেকে নেওয়া

সংযুক্ত আরব আমিরাতে (ইউএই) বিক্ষোভকারী ৫৭ বাংলাদেশিকে দোষী সাব্যস্ত করাটা অন্যায্য বলে উল্লেখ করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। সংস্থাটি বলেছে, বাংলাদেশের কোটা সংস্কার আন্দোলনের পক্ষে দাঁড়ানো এই বিক্ষোভকারীদের দ্রুত বিচারের মাধ্যমে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে, যা উদ্বেগজনক।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের ওয়েবসাইটে ২৪ জুলাই প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এমন প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, ১৯ জুলাই ইউএইর বিভিন্ন এলাকায় কোটা আন্দোলনের সমর্থনে বিক্ষোভ করা হয়। বিক্ষোভকারীদের বেশির ভাগই ছিলেন বাংলাদেশি। এক দিন পর ২১ জুলাই বিক্ষোভকারী ৫৭ বাংলাদেশিকে ১০ বছর থেকে যাবজ্জীবন পর্যন্ত কারাদণ্ডের সাজা দেন একটি আদালত।

সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থার বরাতে এইচআরডব্লিউ জানিয়েছে, আবুধাবির ওই আদালতে ৫৩ বাংলাদেশিকে ১০ বছরের, ১ জনকে ১১ বছরের এবং ৩ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। সাজার মেয়াদ শেষে তাঁদের দেশে পাঠিয়ে দেওয়ার নির্দেশও দিয়েছেন আদালত। মাত্র এক দিনের শুনানির পর তাঁদের এ সাজা দেওয়া হয়।

এইচআরডব্লিউর আরব আমিরাতবিষয়ক গবেষক জোয়ি শেয়া বলেন, ‘যখন ৪৮ ঘণ্টার কম সময়ের মধ্যে তদন্ত ও বিচার করে আদালতের রায় দেওয়া হয়, তখন বিবাদীরা কোনোভাবেই ন্যায্য বিচার পেতে পারেন না। এই রায় বিচারব্যবস্থার প্রতি একটি প্রহসন। আরব আমিরাতের কর্তৃপক্ষের শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভের জন্য সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের অবিলম্বে মুক্তি দেওয়া উচিত।’

যে দ্রুততার সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত, বিচার ও সাজা দেওয়া হয়েছে, তাতে এই বিচারিক প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে বলে এইচআরডব্লিউর প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। সংস্থাটি বলছে, সাজা পাওয়া ৫৭ জনকে মুক্তি দিতে আরব আমিরাত কর্তৃপক্ষের কাছে বাংলাদেশি দূতাবাস ও বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের আহ্বান জানানো উচিত।

আরব আমিরাতে মতপ্রকাশ ও সভা-সমাবেশের স্বাধীনতার ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশটির দণ্ডবিধি অনুযায়ী বিক্ষোভ ও সমাবেশ পুরোপুরি নিষিদ্ধ। এটি আরব আমিরাতের সংবিধান এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের বিভিন্ন মানদণ্ড লঙ্ঘন করে। যেমন বলা চলে মানবাধিকারবিষয়ক আরব সনদের কথা। আরব আমিরাতও এই সনদে স্বাক্ষরকারী একটি দেশ।