যথাযথ উদ্যোগ নিলে শিক্ষাব্যবস্থা বদলে দিতে পারবে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো

দেশের ১৯টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা বিশেষ গোলটেবিল বৈঠকে অংশ নেনছবি: সংগৃহীত

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য বেশ কিছু প্রতিবন্ধকতার কথা উল্লেখ করেছেন দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা। তাঁরা বলেছেন, এসব প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে উঠতে পারলে আগামী দিনগুলোতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো দেশের বেশির ভাগ মানুষের কাছে মানসম্মত উচ্চশিক্ষার দ্বার খুলে দিতে পারবে। সরকারি পর্যায় থেকে যথাযথ উদ্যোগ নেওয়া হলে ভবিষ্যতে দেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে বদলে দিতে পারবে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো।

গত বুধবার ঢাকার উত্তরায় অবস্থিত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজি (আইইউবিএটি) ক্যাম্পাসে দেশের ১৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের নিয়ে ‘বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্জন, প্রতিবন্ধকতা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা’ শীর্ষক বিশেষ গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করা হয়। সেখানে দেশের উচ্চ শিক্ষাব্যবস্থা এবং আর্থসামাজিক উন্নয়নে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অবদান, নানা পর্যায়ের প্রতিবন্ধকতা এবং তা থেকে উত্তরণের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করা হয়। পরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

গোলটেবিল বৈঠকে বলা হয়, নব্বইয়ের দশক থেকে দেশে উচ্চশিক্ষায় অবদান রেখে চলেছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। অধিকাংশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় নির্ভর করে শিক্ষার্থীদের টিউশন ফির ওপর। এ পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তহবিল সংগ্রহের জন্য আরও নানা পন্থা খোঁজার চেষ্টা করে যাচ্ছে। পূর্বপ্রস্তুতি ছাড়াই সব বিশ্ববিদ্যালয়কে বছরে দুই সেমিস্টার চালুর নির্দেশনার ফলে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ব্যাহত হচ্ছে। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে একই গ্রেডিং ব্যবস্থা আনার ফলে তাদের নতুনভাবে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) ও মন্ত্রণালয়ের আমলাতন্ত্রভিত্তিক জটিলতা এবং এসব প্রতিষ্ঠানে দক্ষ জনবলের অভাব থাকার বিষয়টিকেও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আধুনিক শিক্ষাক্রম তৈরিতে পিছিয়ে থাকার কারণ বলে মনে করেন উপাচার্যরা।

উপাচার্যরা বলেন, যেসব চলমান প্রতিবন্ধকতা এসেছে সেগুলোকে কাটিয়ে ওঠার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ক্ষেত্রে এখন সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্ব চুক্তির আওতায় নতুন তহবিল গঠন করা প্রয়োজন। এ ছাড়া শিল্পকারখানাগুলোতে কাজে লাগে এমন শিক্ষাক্রম তৈরির মাধ্যমে দেশের মানবসম্পদ উন্নয়ন করার ব্যাপারেও গুরুত্ব দিতে হবে। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো থেকে স্বীকৃতি এলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর তহবিলের সমস্যা অনেকটাই কমিয়ে আনা সম্ভব।

আইইউবিএটির উপাচার্য অধ্যাপক আবদুর রবের সঞ্চালনায় গোলটেবিল আলোচনায় অংশ নেন সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটির উপাচার্য পারভীন হাসান, ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক সহিদ আকতার হুসাইন, ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুল আউয়াল খান, সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক এ এফ এম মফিজুল ইসলাম, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব হেলথ সায়েন্সেসের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদুল আলম, ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের উপাচার্য অধ্যাপক ইমরান রহমান, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক এম লুৎফর রহমান, ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক মো. আবুল কাশেম মিয়া, সিসিএন ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির উপাচার্য অধ্যাপক মো. আলাউদ্দিন, নর্থ ইস্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের উপাচার্য অধ্যাপক মো. ইলিয়াস উদ্দিন বিশ্বাস, প্রাইম ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক মো. জাহাঙ্গীর আলম, প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক মো. আবদুল মান্নান চৌধুরী, তিস্তা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ আবুল কাশেম, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজির (বিইউবিটি) উপাচার্য মোহাম্মদ ফৈয়াজ খান, নটর ডেম ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের উপাচার্য অধ্যাপক প্যাট্রিক গ্যাফনি, ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান, জার্মান ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের উপাচার্য অধ্যাপক এস এম ইকবাল হোসেন, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের উপাচার্য অধ্যাপক শাহজাহান খান প্রমুখ।