রাতে শনির আখড়া রণক্ষেত্র, টোল প্লাজায় আগুন

রাজধানীর শনিরআখড়া এলাকায় মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের টোল প্লাজায় আগুন দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। আজ বুধবার সন্ধ্যার পরছবি: সংগৃহীত

ঢাকায় শনির আখড়ায় বুধবার ১৩ ঘণ্টা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। তবে রাতে শনির আখড়া রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। সেখানে টায়ার ও কাঠ×জ্বালিয়ে বিভিন্ন স্থানে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে। মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের টোল প্লাজায়ও আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে।

সরেজমিনে দেখা যায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক দখলে রেখেছেন আন্দোলনকারীরা। সকাল ১০টা থেকে সর্বশেষ রাত সোয়া ১১টা পর্যন্ত সড়ক তাঁদের দখলে রয়েছে। শনির আখড়া থেকে সাইনবোর্ড পর্যন্ত শত শত আন্দোলনকারী অবস্থান নিয়েছেন। শনির আখড়ার রাস্তায় এখনো আগুন জ্বলছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, সকাল ১০টা থেকে শনির আখড়ায় দনিয়া কলেজের শিক্ষার্থীরাসহ স্থানীয় কলেজের শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেন। তবে সন্ধ্যার সময় পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের দফায় দফায় পাল্টাপাল্টি ধাওয়া চলতে থাকে। রাত ১১টা পর্যন্ত একই অবস্থা চলছিল।

শনিরআখড়া এলাকার প্রধান সড়কের জায়গায় জায়গায় আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করছেন আন্দোলনকারীরা। আজ বুধবার রাতে
ছবি: আসাদুজ্জামান

স্থানীয় রিকশাচালক আজাহার প্রথম আলোকে বলেন, কিছুক্ষণ পরপরই পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা চলছে।

স্থানীয় আরেক বাসিন্দা বলেন, সকাল থেকেই সড়কে অবস্থান নিয়ে আন্দোলনকারীরা যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ করে দিয়েছেন। মহাসড়কে শনির আখড়া অংশে কাঠ জ্বালিয়ে আগুন দেওয়া হয়েছে। সন্ধ্যার পর্যন্ত শনির আখড়া থেকে রায়েরবাজার পর্যন্ত দুই পাশের দোকানপাট বন্ধ হয়ে গেছে।

শনির আখড়ার রসুলপুরের আরেক বাসিন্দা প্রথম আলোকে বলেন, সংঘর্ষে সন্ধ্যা থেকে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা অলিগলিতে ছড়িয়ে যাচ্ছে। শনির আখড়া থেকে কাজলা পর্যন্ত পাঁচটি স্থানে আগুন জ্বলছে।

রাত ১১টার পরেও শনির আখড়া এলাকার সড়কে অবস্থান নিয়ে আছেন আন্দোলনকারীরা
ছবি: আসাদুজ্জামান

সরেজমিনে দেখা গেছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর (র‌্যাব, পুলিশ, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন) সদস্যরা যাত্রাবাড়ী থানা এলাকায় অবস্থান করছেন। আন্দোলনকারীরা কাজলা থেকে সাইনবোর্ড পর্যন্ত অবস্থান করছেন।

যাত্রাবাড়ী থানার সামনে অবস্থান নিয়ে আছে পুলিশ। আজ বুধবার রাতে
ছবি: আসাদুজ্জামান

এদিকে সন্ধ্যায় সেখানে সংঘর্ষের সময় পুলিশের শটগানের গুলিতে আহত ছয়জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে দুই বছরের এক শিশুও রয়েছে।

রাজধানীর দনিয়া এলাকায় দুই বছরের শিশু রোহিত মিয়াকে নিয়ে বাসার ফটকে দাঁড়িয়ে ছিলেন বাবা বাবু মিয়া। পুলিশের ছোড়া ছররা গুলিতে তাঁরা দুজনই আহত হয়েছেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মায়ের কোলে রোহিত
ছবি: প্রথম আলো

আহত ব্যক্তিরা হলেন ইরান, সোহাগ, বাবু মিয়া ও তাঁর শিশুপুত্র রোহিত মিয়া এবং স্কুলছাত্র মাহিম আহমেদ। আহত ব্যবসায়ী বাবু মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, তিনি দনিয়া এলাকায় শিশুসন্তান রোহিতকে নিয়ে বাসার ফটকে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তখন পুলিশের ছোড়া ছররা গুলি তাঁর ও ছেলের গায়ে লাগে।

আরও পড়ুন