আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) সংশোধন অধ্যাদেশের খসড়া উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদন
‘আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) সংশোধন অধ্যাদেশ ২০২৪’ অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ। আজ বুধবার সচিবালয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে খসড়াটি অনুমোদন দেওয়া হয়। আজই প্রথমবারের মতো সচিবালয়ে অফিস করেন প্রধান উপদেষ্টা।
বৈঠক শেষে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের পক্ষে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের জানানো হয়। এ ছাড়া বিকেলে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আবদুর রশীদ।
গণহত্যা, মানবতাবিরোধী অপরাধ, যুদ্ধাপরাধ ও আন্তর্জাতিক আইনের আওতাধীন অন্যান্য অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিচারের লক্ষ্যে ১৯৭৩ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন প্রণয়ন করা হয়েছিল। এখন ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান চলাকালে যেসব হত্যাকাণ্ড হয়েছে, তার বিচারপ্রক্রিয়া ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে এই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক অপরাধগুলোর সংজ্ঞা যুগোপযোগীকরণ, অপরাধের দায় নির্ধারণ, অডিও ও ভিডিওর মাধ্যমে বিচারকাজ ধারণ ও সম্প্রচার, বিদেশি কাউন্সেলের বিধান, বিচারকালে অভিযুক্তের অধিকার, অন্তর্বর্তীকালীন আপিল, সাক্ষ্যের গ্রহণযোগ্যতা ও প্রাসঙ্গিকতা–সংক্রান্ত বিধান, তদন্তকারী কর্মকর্তার তল্লাশি ও জব্দ করার বিধান, পর্যবেক্ষক, সাক্ষীর সুরক্ষা, ভিকটিমের অংশগ্রহণ ও সুরক্ষার বিধান সংযোজন করে সংশোধনীর খসড়াটি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে আজ সন্ধ্যা ছয়টায় সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানাবেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল। অবশ্য গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে সংশোধনীর খসড়ায় কী কী আছে, তা জানিয়েছিলেন আইন উপদেষ্টা।
খসড়ায় কী আছে, জানতে চাইলে উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছিলেন, কোনো রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ প্রমাণিত হলে আদালত চাইলে প্রয়োজনীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করতে পারবেন।
উপদেষ্টা বলেছিলেন, প্রস্তাবে যেটি আছে, সেখানে আদালতকে সেভাবে সরাসরি ক্ষমতা দেওয়া হয়নি। বলা হয়েছে, আদালত যদি মনে করেন, তাহলে প্রয়োজনীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য তাঁরা সুপারিশ করতে পারবেন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশ করবেন।
এ বিষয়ে আইন উপদেষ্টা ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে আরও বলেন, ‘সংশ্লিষ্ট যেসব কর্তৃপক্ষের রাজনৈতিক দলের বিষয়ে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার অনুমোদন রয়েছে—স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আছে, নির্বাচন কমিশন আছে...এগুলোর কথা খসড়ায় উল্লেখ করা নেই। কিন্তু যদি মনে করে, তাহলে করতে পারে। এটা এমন না যে আদালত শাস্তি দেবেই। আদালত যদি মনে করে, শাস্তি দেওয়ার সুপারিশ করবে শুধু। এটা খসড়ায় রাখা হয়েছে।’