অপারেটরদের তথ্যভান্ডার তৈরিতে ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে বিটিআরসি
মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য নিয়ে গ্রাহক ফরম পূরণের জন্য আবারও চিঠি দেওয়া হয়েছে মোবাইল অপারেটরদের। এ জন্য বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) এবার কাল ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে। অপারেটররা অবশ্য বিষয়টি নিয়ে আবার বিটিআরসির সঙ্গে আলোচনায় যেতে চায়।
মানুষের নাম, জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর, মা-বাবার নাম, জন্মতারিখ, ঠিকানা, লিঙ্গপরিচয়, পেশা ও ছবি নিয়ে গ্রাহকের তথ্যভান্ডার তৈরির জন্য দুই বছর ধরে চিঠি দিয়ে আসছে বিটিআরসি। আর এ তথ্য সংগ্রহ করতে বলা হয়েছে আইসিটি বিভাগের সংস্থা বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশ ন্যাশনাল ডিজিটাল আর্কিটেকচারের (বিএনডিএ) মাধ্যমে। বিএনডিএর একটি সেবা হলো ‘পরিচয়’, যা ২০১৯ সালের জুলাই মাসে চালু হয়। এটি পরিচালনা করে ডিজিকন টেকনোলজিস নামের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান।
সবশেষ ৫ ফেব্রুয়ারি পাঠানো চিঠিতে বিটিআরসি বলেছে, ‘ইলেকট্রনিক টেলিযোগাযোগ গ্রাহক নিবন্ধন ফরম অটোফিলকরণ’ কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে এবং ১৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে অগ্রগতির প্রতিবেদন কমিশনে পাঠাতে হবে।
মোবাইল অপারেটর সূত্রে জানা যায়, বিটিআরসির সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে তারা আবারও আলোচনায় যেতে চায়। অপারেটররা এ ধরনের কোনো তথ্যভান্ডার তৈরিতে আগ্রহী নয়। তারা বলছে, আইন অনুযায়ী কোনো বেসরকারি প্রতিষ্ঠান নাগরিকদের ব্যক্তিগত তথ্যের ভান্ডার তৈরি করতে পারে না। গ্রাহকদের তথ্য তারা নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যভান্ডার থেকেই যাচাই করে।
অভিযোগ আছে, ডিজিকনকে ব্যবসা পাইয়ে দিতেই তথ্যভান্ডার তৈরির চাপ দেওয়া হচ্ছে। মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য দিতে মোবাইল অপারেটরদের কাছে জনপ্রতি প্রায় ১০ টাকা দাবি করছে ‘পরিচয়’। আর ইসি জাতীয় পরিচয়পত্র অনুবিভাগ থেকে অপারেটররা যাচাইসেবা পায় জনপ্রতি ৫ টাকায়। পরিচয়ের দাবি, তারা এটি জাতীয় পরিচয়পত্র, জন্মনিবন্ধন, মুঠোফোন নম্বর ও ছবি যাচাইয়ের সুবিধা দেয়। রাজস্বের বড় অংশই পাবে ডিজিকন।
পরিচয় ইস্যুতে বিটিআরসি গত ১৮ জানুয়ারি অংশীজনদের সঙ্গে একটি বৈঠক করে। সংস্থাটির একটি সূত্র জানিয়েছে, বৈঠকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়, মানুষের ব্যক্তিগত তথ্যের জন্য তাদের মোবাইল অপারেটরদের ওপর নির্ভর করতে হয় না। তখন বিটিআরসি থেকে বলা হয়, অপারেটরদের তথ্যভান্ডার তৈরি করতে হবে না। তবে গত ২৫ জানুয়ারি বিটিআরসি অপারেটরদের চিঠি দিয়ে মানুষের তথ্য নেওয়া এবং তা সংরক্ষণের নির্দেশ দেয়।
ওই চিঠির জবাবে মোবাইল অপারেটরদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল টেলিকম অপারেটরস অব বাংলাদেশ (অ্যামটব) গত ৩০ জানুয়ারি বিটিআরসিকে চিঠি দিয়ে বলেছে, ‘আমরা অবাক হচ্ছি এই কারণে যে বৈঠকের আলোচনা ও সিদ্ধান্তের বিষয়টি চিঠিতে প্রতিফলিত হয়নি।’
এরপর বিটিআরসি আবার চিঠি দিয়ে ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে।