চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার সাদা দলের সাইফুল ইসলাম

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার পদে নিয়োগ পেয়েছেন অধ্যাপক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামকে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। দায়িত্ব নেওয়ার দিন থেকে দুই বছর তিনি এই পদে দায়িত্ব পালন করবেন।

আজ সোমবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য সাবেক ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার কে এম নূর আহমদ স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এই তথ্য জানানো হয়েছে। জানতে চাইলে কে এম নূর আহমদ প্রথম আলোকে বলেন, আজ অপরাহ্ণ থেকে এই আদেশ কার্যকর হবে। উপাচার্যের নির্দেশে এই নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে নতুন ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার দায়িত্ব পালন করবেন।

অধ্যাপক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক ছাত্র। এই বিভাগ থেকেই তিনি ১৯৯২ সালে স্নাতক ও ১৯৯৩ সালে স্নাতকোত্তর পাস করেন। পরে ২০০৩ সালে প্রভাষক হিসেবে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগাযোগ করেন। পদোন্নতি পেয়ে ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর থেকে তিনি অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত আছেন।

ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার হিসেবে নিয়োগ পাওয়া সাইফুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের রাজনৈতিক সংগঠন সাদা দলের সঙ্গে যুক্ত। এই দল ক্যাম্পাসে বিএনপি ও জামাতপন্থী হিসেবে পরিচিত। তবে বিএনপিপন্থী শিক্ষকদেরও 'জাতীয়বাদী শিক্ষক ফোরাম' নামে আলাদা দল রয়েছে। এই দলে যুক্ত শিক্ষকদের দাবি সাদা দলে বিএনপিপন্থী কেউ নেই। এই দলটি শুধু জামায়াতপন্থী শিক্ষকদের।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকসহ গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক পদে ভারপ্রাপ্ত কাউকে নিয়োগ দেওয়ার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের আপত্তি রয়েছে। ২০২২ সালের মার্চে এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে চিঠি পাঠিয়ে নির্দেশনা দিয়েছিল কমিশন। চিঠিতে কমিশন উল্লেখ করে, খণ্ডকালীন বা ভারপ্রাপ্ত হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হলে প্রশাসনিক কাজে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী এসব পদে পূর্ণকালীন নিয়োগ দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

এসব পদে স্থায়ী কাউকে নিয়োগ অথবা শিক্ষকদের বাদ দিয়ে কর্মকর্তাদের নিয়োগ দেওয়ার দাবি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা সমিতিরও। ২০২২ সালে নভেম্বর ও ডিসেম্বরে কয়েক দফা তৎকালীন উপাচার্যকে চিঠি দিয়েও এ দাবি তুলেছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা সমিতির নেতারা। একই দাবিতে মুখে কালো কাপড় বেঁধে অবস্থান কর্মসূচি ও কর্মবিরতিও পালন করেছিলেন তাঁরা।

কর্মকর্তাদের দাবি, রেজিস্ট্রার পদটি কর্মকর্তাদের। এটি শিক্ষকদের কোনো পদ নয়। তাঁরা চান, কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে কাউকে এ পদে নিয়োগ দেওয়া হোক। এসব দাবির মুখে রেজিস্ট্রার পদ থেকে পদত্যাগ করেন সমাজতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক এস এম মনিরুল হাসান। পরে কে এ নূর আহমদকে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে পুনরায় ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার পদে নিয়োগ দেন তৎকালীন উপাচার্য। কে এ নূর আহমদ এর আগে ২০১৮ সালের ৩ এপ্রিল থেকে ২০২০ সালের ২৯ জুন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ছিলেন।

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি রশীদুল হায়দার প্রথম আলোকে বলেন, নতুন উপাচার্য ও সহউপাচার্য নিয়োগের পর সৌজন্যে সাক্ষাতের সময় তাঁরা কর্মকর্তাদের মধ্যে থেকে কাউকে এই পদে নিয়োগ দেওয়া অথবা নির্বাচনী বোর্ডের মাধ্যমে স্থায়ী কাউকে নিয়োগ দেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন। নতুন রেজিস্ট্রার নিয়োগের পর তাঁরা (কর্মকর্তা সমিতির নেতারা) বৈঠক করেছেন। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় তাঁরা নতুন রেজিস্ট্রারের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করবেন।