কমলাপুর রেলস্টেশনের মনিটরে অশ্লীল ভিডিও প্রদর্শনে জড়িতদের খুঁজে বের করার নির্দেশ আদালতের

আদালতপ্রতীকী ছবি

রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশনে ট্রেনসংক্রান্ত তথ্য প্রচারের ডিজিটাল মনিটরে অশ্লীল ভিডিও প্রচারের সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (সিজেএম) আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট মো. তাজুল ইসলাম সোহাগ আজ রোববার এ আদেশ দেন। ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আবুল কালাম খান প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আদালত আদেশে উল্লেখ করেন, কমলাপুর রেলস্টেশনের ট্রেনসংক্রান্ত তথ্য প্রচারের ডিজিটাল মনিটরে অশ্লীল ভিডিও প্রচারের বিষয়ে কয়েকটি গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়। কমলাপুর রেলওয়ে জংশন দেশের কেন্দ্রীয় রেলওয়ে জংশন। এ স্টেশন লাখো মানুষের পদচারণে মুখরিত থাকে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা মানুষ রাজধানীসহ বিভিন্ন গন্তব্যে পৌঁছান। সেখানে কোমলমতি শিশুসহ আবালবৃদ্ধবনিতা নির্বিশেষে সবাই সাময়িক সময়ের জন্য রেলস্টেশনে অবস্থান করে থাকেন।

আদালত আদেশে আরও উল্লেখ করেন, কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে ডিজিটাল মনিটর রয়েছে। তাতে বিভিন্ন আন্তনগর ও লোকাল ট্রেনের সময়সূচি ও বাণিজ্যিক প্রচারণা চালানো হয়। বাণিজ্যিক প্রচারণার জন্য একজন বাণিজ্যিক কর্মকর্তা নিযুক্ত থাকেন। কিন্তু কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের মতো স্পর্শকাতর জায়গায় এ ধরনের ভিডিও প্রচারিত হওয়া দুঃখজনক, আপত্তিকর ও গভীর উদ্বেগের। এতে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনাসহ ব্যর্থতা প্রকাশিত হয়।

আদালত আদেশে আরও উল্লেখ করেন, কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে ডিজিটাল মনিটরে অশ্লীল ভিডিও প্রচার দেশের সামাজিক প্রেক্ষাপটসহ দেশে–বিদেশে অবস্থানরত মানুষের কাছে ভুল বার্তা যাবে। অথচ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি।

পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশ্লিষ্ট ধারা তুলে ধরে আদালত আদেশে বলেন, কোনো ব্যক্তি ইন্টারনেট বা ওয়েবসাইটে বা মোবাইল বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক ডিভাইসের মাধ্যমে পর্নোগ্রাফি সরবরাহ ইত্যাদি ও প্রদর্শনের মাধ্যমে গণউপদ্রব সৃষ্টি করা অপরাধ। কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের নাম–ঠিকানা খুঁজে বের করার নির্দেশ দেন আদালত।

এর আগে গত ২৭ ডিসেম্বর কমলাপুর রেলস্টেশনের ট্রেনসংক্রান্ত তথ্য প্রচারের ডিজিটাল মনিটরে অশ্লীল ভিডিও প্রচার করা হয়। রেলওয়ে সূত্র জানায়, রাত ২টা ৫ মিনিটের দিকে হঠাৎ ডিজিটাল মনিটরে অশ্লীল ভিডিও চলতে শুরু করে। প্রায় ২০ মিনিটের বেশি সময় ধরে চলে। এ সময় যাত্রীরা বিব্রত ও ক্ষুব্ধ হন। উপস্থিত লোকজন এটি বন্ধ করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এক পর্যায়ে এক যাত্রী পাথর ছুড়ে ডিজিটাল মনিটর ভেঙে ফেলেন।

এ ঘটনা তদন্তে রেলের বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তাকে প্রধান করে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে রেলওয়ে সূত্র জানিয়েছে। রেলওয়ে সূত্র আরও জানায়, রেলস্টেশনের ডিজিটাল মনিটর ও বোর্ডগুলো সংস্থাটির সংকেত বিভাগের তত্ত্বাবধানে চলে। কিছু কিছু মনিটর পরিচালিত হয় টিকিট বিক্রির দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান সহজ ডটকমের অধীনে।