মুসলমান নারীরা যুগ যুগ ধরে নির্যাতিত হচ্ছেন—কথাটি যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো জোরালোভাবে প্রচার করে আসছে। কিন্তু প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের নারীবাদী চিন্তা একযোগে বিকশিত হয়েছে এবং একে অপরকে প্রভাবিত করেছে। সেই ইতিহাস নিরপেক্ষভাবে কম লেখা হচ্ছে।
ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড (ইউপিএল) থেকে প্রকাশিত ‘সিস্টার ইন দ্য মিরর: আ হিস্ট্রি অব মুসলিম ওমেন অ্যান্ড দ্য গ্লোবাল পলিটিকস অব ফেমিনিজম’ বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে এসব কথা বলা হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর গ্রিন রোডে ইউপিএলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
বইটির লেখক যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার জেন্ডার অ্যান্ড উইমেন স্টাডিজ অ্যান্ড গ্লোবাল স্টাডিজের অধ্যাপক ইলোরা শেহাবুদ্দীন বলেন, প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের নারী আন্দোলনের ধারা পরস্পরের কাছে আয়নার মতো। পশ্চিমের নারীবাদী আন্দোলন এবং দক্ষিণ এশিয়ার নারীবাদী আন্দোলন একযোগে বিকাশ লাভ করেছে। এ বইয়ে দক্ষিণ এশিয়ার প্রেক্ষিত থেকে বিষয়টি দেখানোর চেষ্টা করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের সাবেক অধ্যাপক সোনিয়া নিশাত আমিন বলেন, ইতিহাসের অনেক দিক নিয়ে বইটিতে আলোচনা করা হয়েছে। এ কারণে বইটি গুরুত্বপূর্ণ। আর আন্তর্জাতিক রাজনীতির সঙ্গে নারীবাদের সম্পর্ক বুঝতে হলে বইটি পড়া জরুরি বলে মন্তব্য করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সেন্ট্রাল উইমেনস ইউনিভার্সিটির উপাচার্য পারভীন হাসান। তিনি বলেন, ইতিহাস পাঠ করলে দেখা যায়, ক্ষমতার সঙ্গে স্থাপত্য নির্মাণের সম্পর্ক আছে। ভারতের মুর্শিদাবাদে একটি মসজিদ নির্মাণ করেছিলেন মুন্নি বেগম নামের প্রভাবশালী এক নারী। নারীর ক্ষমতায়ন সম্পর্কে জানতে রাজনীতি ও ইতিহাসের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বইটি পড়া জরুরি।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রেজওয়ানা করিম, ইউপিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহরুখ মহিউদ্দিনসহ অন্যরা। এ সময় ইউপিএলকে বইটির বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশীয় সংস্করণ প্রকাশের সুযোগ দেওয়ায় লেখককে ধন্যবাদ জানানো হয়।