পাখিটি কি আপনার চোখে পড়েছিল?
কামাল: না, জাকির নামের এক কিশোর ছুটে এসে খবরটি জানায়। দেরি না করে ছুটে যাই।
আপনাকেই কেন জানাল?
কামাল: কয়েক বছর ধরে বন্য প্রাণী ও পাখি সংরক্ষণ নিয়ে কাজ করছি। মানুষ সেটা জানে। কিশোরটি সে কারণেই জানিয়েছে।
গিয়ে কী দেখলেন?
কামাল: গিয়ে দেখি পাখিটি ডানা মেলে ধানখেতে পড়ে আছে। উঠে দাঁড়াতে পারছিল না। দেখে খুব কষ্ট লেগেছিল।
তারপর কী করলেন?
কামাল: এলাকার বড় ভাই খোরশেদ আলমকে ফোন করি। তিনি দ্রুত ছুটে আসেন। তাঁর মোটরসাইকেলে করে পাখিটিকে হাসপাতালে নিয়ে যাই।
চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে গেল?
কামাল: না, এখনো সুস্থ হয়নি। চিকিৎসার পর পাখিটিকে বাড়ি নিয়ে এসেছি।
পরে কী হলো?
কামাল: বাড়িতে বাজার থেকে মাছ কিনে এনে খাওয়ানোর চেষ্টা করেছি। প্রথম দিন খেয়েছে। পরে খাচ্ছিল না।
এখন?
কামাল: পাখিটি কোনো রোগে আক্রান্ত বোধ হয়। সে জন্য মৌলভীবাজারের বন্য প্রাণী বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তারা এসে শুক্রবার বিকেলে পাখিটিকে নিয়ে গেছে [সেখানে পাখিটির চিকিৎসা চলছে]।
আপনি কী করেন?
কামাল: জুড়ীর তৈয়বুন্নেছা খানম সরকারি কলেজে সমাজবিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষে পড়ছি।
পরিবারে আর কে কে আছে?
কামাল: মা, বাবা আর ছোট এক বোন। বড় দুই বোনের বিয়ে হয়েছে।
আপনি বলছিলেন, বন্য প্রাণী ও পাখি সংরক্ষণ নিয়ে কাজ করেন। সেটা কীভাবে?
কামাল: বাড়ির কাছেই লাঠিটিলা সংরক্ষিত বন। পাথারিয়া বন্য প্রাণী সংরক্ষণ টিম নামের স্থানীয় একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে কাজ করি।
এর আগে কি কখনো পাখি বা বন্য প্রাণী রক্ষা করেছেন?
কামাল: আমাদের এলাকাটা পাহাড়ি। মাঝেমধ্যে হনুমান, লজ্জাবতী বানর ও অজগরের দেখা পাওয়া যায়। লোকালয়ে এলে মানুষ প্রাণীগুলোকে ধরে ফেলে। তখন বন বিভাগকে খবর দিই।
এলাকায় কি এখন পাখি শিকার চলে?
কামাল: একেবারে বন্ধ হয়নি। অনেকে লুকিয়ে ধানখেতে বিষটোপ দিয়ে, ফাঁদ পেতে পাখি শিকার করে।
মদনটাক পাখিটিকে উদ্ধারের পর আপনাকে নিয়ে গণমাধ্যমে প্রতিবেদন হয়েছে। কেউ কিছু বলেছে?
কামাল: সংবাদ প্রকাশের পর বন্ধুবান্ধব, পরিচিত অনেকে ফেসবুকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।