স্মৃতি জাদুঘরে রাখা হবে নাফিজের দেহ বহনকারী রিকশাটি

গণভবনে আজ বৃহস্পতিবার রিকশা হস্তান্তরের সময় রিকশাচালক মোহাম্মদ নুরু (মাঝে), বাঁয়ে তথ্য উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম এবং ডানে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলমছবি: ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সৌজন্যে

ছাত্র–জনতার আন্দোলনে শহীদ গোলাম নাফিজের দেহ বহনকারী রিকশাটি জুলাই গণ-অভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘরে স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে রাখা হবে। আজ বৃহস্পতিবার গণভবনে নাফিজের দেহ বহনকারী রিকশাটি দেখতে এসে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম এ কথা জানিয়েছেন।

গণভবনে রিকশা হস্তান্তরের সময় রিকশাচালক মোহাম্মদ নুরুকে তাঁর সাহসিকতার জন্য ধন্যবাদ জানান এবং আর্থিক সহায়তার আশ্বাস দেন উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম।

ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ৫ নভেম্বর প্রথম আলোয় ‘নাফিজের নিথর দেহ পড়ে থাকা রিকশাটি বিক্রি করে দিয়েছেন নুরু’ শীর্ষক ভিডিও প্রতিবেদনটি দেখে উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম তাৎক্ষণিক রিকশা ও রিকশাচালককে খুঁজে বের করার জন্য তাঁর দপ্তরের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন। মোহাম্মদ নূরুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি রিকশাটি ৩৫ হাজার টাকায় লন্ডনপ্রবাসী আহসানুল কবীর সিদ্দিকীর কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন বলে জানান। আহসানুল কবীর সিদ্দিকীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি রিকশাটি জুলাই গণ-অভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘরে হস্তান্তর করার ইচ্ছা পোষণ করেন। সে অনুযায়ী আজ রিকশাটি জুলাই গণ-অভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘরের যুগ্ম আহ্বায়ক ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলমের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

গুলিবিদ্ধ নাফিজকে রিকশার পাদানিতে তুলে দেওয়া হয়। তখনো রড ধরে রেখেছিল নাফিজ। দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার ফটোসাংবাদিক জীবন আহমেদের তোলা এই ছবি দেখেই মা-বাবা হাসপাতালের মর্গে খুঁজে পান ছেলের মরদেহ
ছবি: জীবন আহমেদ

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৪ আগস্ট রাজধানীর ফার্মগেটের পদচারী-সেতুর নিচে গুলিবিদ্ধ হয় নাফিজ। রিকশার পাদানিতে তার পতাকাবাঁধা মাথা এক পাশে ঝুলে আছে, আরেক পাশে নিস্তেজ পা দুটি ঝুলছে। রিকশার চেইনের সঙ্গে পেঁচিয়ে যাচ্ছিল বলে নাফিজের হাত রিকশার রডের সঙ্গে লাগিয়ে দিয়েছিলেন নুরু। চারপাশে তখন মারমুখী পুলিশ। চলছিল বৃষ্টির মতো গুলি। সেই অবস্থাতেই নাফিজের নিথর দেহ নিয়ে হাসপাতালের দিকে ছোটেন নুরু।

মানবজমিন পত্রিকার ফটোসাংবাদিক জীবন আহমেদ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেই মুহূর্তের কিছু ছবি তুলেছিলেন। তাঁর তোলা ছবি দেখেই (৪ আগস্ট দিবাগত রাত ১২টার পর) নাফিজের মা-বাবা রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে গিয়ে লাশ পেয়েছিলেন ছেলের।

নাফিজ রাজধানীর বনানী বিদ্যানিকেতন স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়ে পাস করে কলেজে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছিল। পরিবারসহ থাকত মহাখালীতে। তারা দুই ভাই, নাফিজ ছিল ছোট।