বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উদ্দেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘আমরা এই দেশেতে জন্মি, এই দেশেতে মরব। পালাব না। কোথায় পালাব। আমরা পালাব না, প্রয়োজনে ফখরুল সাহেবের বাসায় গিয়ে উঠব। কী জায়গা দেবেন? না হলে ঠাকুরগাঁওয়ে বাড়ি আছে না, ওই বাড়িতে গিয়ে উঠব।’
আজ রোববার দুপুরে রাজশাহীর মাদ্রাসা মাঠে আওয়ামী লীগের জনসভায় ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন। এই জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা।
‘সরকার পালাবার পথ খুঁজে পাবে না’, মির্জা ফখরুল ইসলামের এমন বক্তব্যের প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সরকারকে পালাতে বলে। পালাবার পথ নাকি খুঁজে পাবে না। ফখরুল সাহেব, পালিয়ে তো আছেন আপনারা? তারেক রহমান আর রাজনীতি করবে না মুচলেকা দিয়ে পালিয়েছে লন্ডনে। সাত বছরের দণ্ডিত পলাতক আসামি আপনাদের নেতা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান পালিয়ে যায়। আমরা পালাতে জানি না।’
বিএনপির এখন মরণযাত্রা চলছে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আপনাদের কি মনে আছে কিছুদিন আগে বিএনপি এখানে একটা সমাবেশ করেছে। সেই সমাবেশ আর আজকের সমাবেশ—রাজশাহীবাসী ও আজকের সারা বাংলাদেশ দেখছে। বিএনপি লাল কার্ড দেখায়, ১০ ডিসেম্বর সরকারের পতন বলে, ৩০ ডিসেম্বর সরকার চলে যায়, ১১ জানুয়ারি সরকার আর নেই। কি, সরকার আছে? শেখ হাসিনা আছে? বিএনপির এখন কী? পদযাত্রা! পদযাত্রা মানেই শেষ যাত্রা। পদযাত্রা মানেই অন্তিমযাত্রা। পদযাত্রা মানেই পেছনযাত্রা। পদযাত্রা মানেই মরণযাত্রা। মরণযাত্রা শুনেছেন না? ওই মরণযাত্রা হচ্ছে এখন বিএনপির।’
বিএনপির অন্তরে জ্বালা মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আর জ্বালা। অন্তর জ্বালা। জ্বালায় জ্বালায় মরে। পদ্মা সেতুর জ্বালা, যেতে না যেতেই আরেক জ্বালা। কী জ্বালা—মেট্রোরেল। মেট্রোরেলের পর আরেক জ্বালা আসছে বঙ্গবন্ধু টানেল। নদীর তলদেশে টানেল। জ্বালারে জ্বালা অন্তর জ্বালা। যেদিকে তাকাই উন্নয়ন, উন্নয়ন। রাজশাহী গ্রিন সিটিতে রূপান্তরিত হয়েছে শেখ হাসিনার উন্নয়নে। আজ রাজশাহী ভাগ্যবান। এই রাজশাহী এখন বাংলাদেশের সবচেয়ে পরিচ্ছন্ন সিটি। মেয়রকে অবশ্যই ধন্যবাদ। তিনি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে রাজশাহীকে নবরূপে সজ্জিত করেছেন।’
আগামী নির্বাচনে ফাইনাল খেলা হবে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তো কী খবর? রেডি? খেলা হবে। পালানো শুরু করেছে। আগেই তো মরণযাত্রা শুরু করেছে। খেলা তাহলে হবে। খেলা হবে আন্দোলনে, নির্বাচনে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে, লুটপাটের বিরুদ্ধে, অর্থ পাচারের বিরুদ্ধে, হত্যা-ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে। প্রস্তুত, আগামী নির্বাচনে ফাইনাল খেলা।’
নির্বাচনের জন্য নেতা–কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘খবর আছে। তৈয়ার হয়ে যান। রেডি হয়ে যান। বিএনপির এখনো শিক্ষা হয়নি। শিক্ষাটা পাবে। যখন আগামী নির্বাচনে আবারও পরাজয়ের মুখ দর্শন করতে হবে। আর আপনারা সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখে আজকে ঐক্যবদ্ধ হোন।’
আজ রোববার বেলা সোয়া তিনটায় আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা জনসভা মঞ্চে উঠলে নেতা-কর্মীরা স্লোগান দিয়ে তাঁকে স্বাগত জানান। এ সময় প্রধানমন্ত্রী হাত উঁচিয়ে নেতা-কর্মীদের অভিবাদন জানান। প্রধানমন্ত্রী মঞ্চে ওঠার পর দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বক্তব্য দেন। এরপর জনসভার সভাপতি রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল বক্তব্য দেন। এরপর বিকেল ৩টা ৫৫ মিনিটে বক্তব্য শুরু করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।