ঈদুল আজহার পর গত শনিবার চট্টগ্রাম নগরে খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হয়েছিল ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকায়। গতকাল রোববার সরেজমিনে নগরে বিভিন্ন বাজারে ঘুরে কাঁচা মরিচের দাম পাওয়া গিয়েছিল ৭০০ থেকে ৮০০ টাকায়। অথচ গতকাল রিয়াজউদ্দিন বাজার আড়তে কাঁচা মরিচের চালান হয়েছিল প্রতি কেজি ৩৩০ টাকায়।
দামের এমন অসংগতির তথ্য পেয়ে আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় চট্টগ্রাম নগরের রিয়াজউদ্দিন বাজারে অভিযান পরিচালনা করেছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম। বাজারের একদিকে আড়ত, অন্য পাশে খুচরা বাজার। অভিযানে নেতৃত্ব দেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের উপপরিচালক মোহাম্মদ ফয়েজ উল্যাহ।
এ সময় রিয়াজউদ্দিন বাজারের খুচরা বাজারে মেসার্স আনছার ট্রেডার্স নামের একটি দোকানে কাঁচা মরিচের দাম জানতে চান কর্মকর্তা। বিক্রেতারা জানান, তাঁরা ২৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন। পাশের আরেকটি দোকানেও একই দামেই বিক্রি হচ্ছে বলে জানান তাঁরা। তবে কর্মকর্তারা কিছু দূর এগিয়ে যাওয়ার পর এক ক্রেতা সেখান থেকে ৩২০ টাকা কেজি দরে মরিচ কেনেন বলে অভিযোগ করেন। তখনই ফিরে গিয়ে হাতেনাতে প্রমাণ পান কর্মকর্তারা। এই দোকানে তখন আরেক ক্রেতা ৩২০ টাকা দরে মরিচ কিনছিলেন।
মিথ্যা বলে বাড়তি দাম নেওয়ার দায়ে এই দোকানকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এ সময় ক্রয়-বিক্রয় মূল্যে অসংগতি থাকায় প্রণব ট্রেডার্স ও রিয়াজ এন্টারপ্রাইজ নামের দুই প্রতিষ্ঠানকে মোট ৪ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, অধিকাংশ দোকানেই মরিচ নেই। এ সময় অভিযানের খবর পেয়ে মরিচ ঢেকে রেখে পালিয়ে যান এক বিক্রেতা। নিছার উদ্দিন নামের এক ক্রেতা বলেন, কোরবানের আগের দিন রাতে এক হাজার টাকায় কাঁচা মরিচ বিক্রি হয়েছে। তখন তদারকি করেনি কোনো সংস্থা। সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা তখনই লাভ করে নিয়েছেন মোটা অঙ্কের মুনাফা।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের উপপরিচালক মোহাম্মদ ফয়েজ উল্যাহ প্রথম আলোকে বলেন, তিনটি দোকানে ক্রয়মূল্যের চেয়ে বেশি দামে কাঁচা মরিচ বিক্রি হতে দেখা গেছে। তাঁদের জরিমানা করে সতর্ক করা হয়েছে। পরে বেশি দামে বিক্রি হওয়ার অভিযোগ পেলে দোকান সিলগালা করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বাজার নিয়ন্ত্রণে অভিযান অব্যাহত আছে।
এদিকে পাইকারি পর্যায়ে গতকালের তুলনায় আজ সকালে দাম কমেছে অন্তত ১৫০ টাকা। রিয়াজউদ্দিন আড়তদার সমিতি সূত্র জানায়, গতকাল আড়তে ৩৩০ টাকা কেজি দরে মরিচ বিক্রি হয়। আজ সকালে ভালো মানের কাঁচা মরিচের চালান হয়েছে প্রতি কেজি ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায়।
রিয়াজউদ্দিন আড়তদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফারুক শিবলী প্রথম আলোকে বলেন, বগুড়া ও মাগুরায় বৃষ্টি হওয়ায় মরিচ পচে যাচ্ছে। এ ছাড়া ভারত থেকে মরিচ আসায় দাম কমেছে।
অভিযানের পর নগরের চকবাজার ও বহদ্দারহাট কাঁচাবাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আজ সকালে রিয়াজউদ্দিন বাজার আড়ত থেকে কাঁচা মরিচ আসার পর দাম ২২০ থেকে ২৪০ টাকায় নেমেছে।