ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতাদের ওপর হামলার প্রতিবাদে ঢাকায় বিক্ষোভ

জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম মুখ্য সংগঠক মোহাম্মদ আতাউল্লাহর ওপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ–সমাবেশ করেছে জাতীয় নাগরিক কমিটি। ঢাকা, ১৫ ডিসেম্বরছবি: সংগৃহীত

জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম মুখ্য সংগঠক মোহাম্মদ আতাউল্লাহর ওপর ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হামলার প্রতিবাদে ঢাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে জাতীয় নাগরিক কমিটি। অবিলম্বে সব হামলাকারীকে গ্রেপ্তার করার দাবি জানিয়েছেন নাগরিক কমিটির নেতারা।

হামলার প্রতিবাদে আজ রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীর বাংলামোটরে জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারাও অংশ নেন। মিছিলটি শাহবাগ মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ হয়।

সমাবেশে জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, ‘খুনি ও ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনার দোসররা এখনো নানাভাবে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সক্রিয় ভূমিকা পালনকারী ব্যক্তিদের ওপর হামলা করছে। কিন্তু প্রশাসনের তরফ থেকে নির্বিকার ভূমিকা দেখা যাচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জিজ্ঞেস করতে চাই- কীভাবে অভ্যুত্থান–পরবর্তী বাংলাদেশে আদালতের মতো একটি পবিত্র প্রাঙ্গণে একটি রুমে ঢুকিয়ে আমার ভাইয়ের ওপর এমন নির্মম হামলা হলো? আপনারা যদি এই হামলার ঘটনার দ্রুত পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হন, তবে আপনাদের মুখে লেগে থাকা চুনকালি আর মুছতে পারবেন না।’

জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, ‘আজকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আতাউল্লাহ ভাইয়ের ওপর হামলা হয়েছে। তাঁকে রক্তাক্ত করা হয়েছে, আমাদের সহযোদ্ধাদের রক্তাক্ত করা হয়েছে, মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় যিনি জড়িত, তিনিও আওয়ামী ফ্যাসিবাদের দোসর। আমাদের দাবি, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আতাউল্লাহ ভাইসহ আমাদের সহযোদ্ধাদের ওপর হামলাকারী অ্যাডভোকেট বাবুলকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আইনজীবী সমিতি থেকে বহিষ্কার করতে হবে। অ্যাডভোকেট বাবুলসহ যারা এই হামলায় যোগ দিয়েছে, নেতৃত্ব দিয়েছে, তাদের আইনজীবীর সনদ বাতিল করতে হবে। অবিলম্বে অ্যাডভোকেট বাবুলসহ সব হামলাকারীকে গ্রেপ্তার করতে হবে।’

আখতার হোসেন আরও বলেন, পতিত ফ্যাসিবাদী স্বৈরাচারীরা বাংলাদেশে আবারও মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার ষড়যন্ত্র করছে। খুলনা রেলস্টেশনের ডিসপ্লেতে লেখা ভেসে ওঠে ‘ছাত্রলীগ ভয়ংকর রূপে ফিরে আসবে’। যারা এই দুঃসাহস দেখিয়েছে, যারা সেই সন্ত্রাসী জঙ্গিদের বাংলার জমিনে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে, অবিলম্বে তাদের প্রত্যেককে আইনের আওতায় নিয়ে এসে বিচার করতে হবে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যসচিব আরিফ সোহেল বলেন, ‘আগস্টের পর পরাজিত ফ্যাসিবাদী ও গণহত্যাকারী শক্তি বারবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। আমাদের অনেক সহযোদ্ধা আগস্টের পর এখনো হামলার শিকার হচ্ছে, হাসপাতালের বেডে কাতরাচ্ছে। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এই পরাজিত ফ্যাসিবাদী শক্তির দোসরদের আইনের আওতায় আনতে বারবার ব্যর্থ হচ্ছে।’

সমাবেশে সমাপনী বক্তব্যে জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘আজকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আমাদের সহযোদ্ধাদের রক্তাক্ত করা হয়েছে। জাতীয় নাগরিক কমিটির ওপর হামলার অর্থ অভ্যুত্থানের শক্তির ওপর হামলা। এই হামলার সাথে জড়িত ফ্যাসিবাদের দোসর ব্রাহ্মণবাড়িয়া আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মফিজুর রহমান বাবুলকে অনতিবিলম্বে আইনজীবী সমিতি থেকে বহিষ্কার করতে হবে।’

বিক্ষোভ সমাবেশে অন্যদের মধ্যে জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন উপস্থিত ছিলেন।