গৃহকর্মীদের প্রতি নিষ্ঠুর আচরণের সংস্কৃতি দূর করতে হবে: উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ
গৃহকর্মীদের স্বাস্থ্য, চিকিৎসা, শিক্ষা, ধর্মীয় আচরণ পালন, ছুটিসহ নানা ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে নিয়োগকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ। তিনি বলেন, গৃহকর্মীদের প্রতি অবহেলা, নিষ্ঠুর আচরণের সংস্কৃতি দূর করতে হবে।
আজ বুধবার রাজধানীতে গণসাক্ষরতা অভিযান এবং অক্সফাম ইন বাংলাদেশ আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ এ আহ্বান জানান। কাজী নজরুল ইসলাম অ্যাভিনিউয়ে অবস্থিত ডেইলি স্টার কার্যালয়ের আজিমুর রহমান সম্মেলনকক্ষে ‘নারী গৃহকর্মীদের সুরক্ষা ও জীবনমান উন্নয়ন: আমাদের করণীয়’ শিরোনামে এ গোলটেবিল বৈঠকটি হয়।
বৈঠকে উপদেষ্টা শারমীন বলেন, ‘যে মানুষটি বাড়ির কাজে সহায়তা করছে, তার সুরক্ষার দায়িত্ব আমাদের। তাদের স্বাস্থ্য, চিকিৎসা, শিক্ষার দায়িত্ব নিতে হবে। নিয়মিত ছুটি দিতে হবে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর ২০২২ সালের জরিপ প্রতিবেদন অনুসারে, দেশে ২৫ লাখের মতো গৃহকর্মী রয়েছে। এর মধ্যে ৮০ শতাংশই নারী। নদীভাঙন, তীব্র দারিদ্র্যের কারণে তারা গ্রামীণ এলাকা থেকে শহরে উন্নত জীবিকার সন্ধানে এসে গৃহকর্মী হিসেবে কাজ নেয়। গৃহকর্মীদের একটি প্রধান চ্যালেঞ্জ হলো শ্রম আইনে থাকা আইনি সুরক্ষা থেকে তারা বাদ পড়ে যায়। ফলে তারা ভালো কাজ খোঁজার ক্ষেত্রে বাধার সম্মুখীন হয়, নিয়মিত শোষণ ও অপব্যবহারের ঝুঁকিতে থাকে।’
উপদেষ্টা গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতি ২০১৫ বাস্তবায়নে আয়োজকদের সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব সরকারের কাছে পেশ করার তাগিদ দেন।
বৈঠকে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রধান শিরীন পারভীন হক, শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রধান সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহম্মদ এবং ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহ্ফুজ আনাম।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন অক্সফাম ইন বাংলাদেশের কর্মসূচি পরিচালক মাহমুদা সুলতানা, আরডিআরএস বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক তপন কুমার কর্মকার, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম, বিশ্বব্যাংকের পরামর্শক মো. খোরশেদ আলম এবং ইনফরমাল সেক্টর ইন্ডাস্ট্রি স্কিলস কাউন্সিলের চেয়ারপারসন মির্জা নুরুল গনি শোভন।
অনুষ্ঠানে কল্যাণপুর পোড়া বস্তি থেকে আসা গৃহকর্মী চম্পা বেগম, লিপি বেগম, গৃহশ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠা নেটওয়ার্কের ভারপ্রাপ্ত সমন্বয়কারী আবুল হোসাইন তাঁদের কাজের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধূরী।