১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের পর আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শুরু

হাইকোর্টফাইল ছবি

চট্টগ্রামে ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালানের ঘটনায় করা মামলায় আসামিদের ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) ও আপিলের ওপর হাইকোর্টে শুনানি অব্যাহত রয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তি উপস্থাপনের পর আসামিপক্ষ যুক্তি উপস্থাপন শুরু করেছে।

বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি নাসরিন আক্তারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ সোমবার এ শুনানি গ্রহণ করেন। আগামীকাল মঙ্গলবার শুনানির জন্য দিন রাখা হয়েছে।

এর আগে গত ৬ নভেম্বর ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের ওপর শুনানি শুরু হয়। সেদিন পেপারবুক (মামলার বৃত্তান্ত) উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে শুনানি শুরু করে রাষ্ট্রপক্ষ। গত বৃহস্পতিবার পেপারবুক উপস্থাপন শেষ হয়। গতকাল ও আজ যুক্তি উপস্থাপন করে রাষ্ট্রপক্ষ। রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তি উপস্থাপনের পর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হাফিজুর রহমানের পক্ষে তাঁর আইনজীবী যুক্তি উপস্থাপন শুরু করেন।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুলতানা আক্তার রুবী শুনানি করেন, সঙ্গে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসিফ ইমরান জিসান। হাফিজুর রহমানের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী সাইফুদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ মোতাহার হোসেন।

যুক্তির বিষয়ে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুলতানা আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, বিচারিক আদালতের রায়ে আসামিদের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। এ ক্ষেত্রে আইনের ব্যত্যয় ঘটেনি। আসামিপক্ষ যুক্তি উপস্থাপন শুরু করেছে। মঙ্গলবার শুনানি হবে।

হাফিজুরের আইনজীবী সাইফুদ্দিন আহমেদ চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, যুক্তি উপস্থাপন করেছেন। তিনি তাঁর অসমাপ্ত বক্তব্য মঙ্গলবার উপস্থাপন করবেন।

২০০৪ সালের ১ এপ্রিল সিইউএফএল ঘাট থেকে আটক করা হয় ১০ ট্রাকভর্তি অস্ত্রের চালান। এ নিয়ে কর্ণফুলী থানায় অস্ত্র আইন ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে চোরাচালানের অভিযোগ এনে দুটি মামলা হয়। মামলায় ২০১৪ সালের ৩০ জানুয়ারি চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালত এবং বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-১ রায় দেন। এর মধ্যে অস্ত্র চোরাচালান মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ে সাবেক শিল্পমন্ত্রী ও জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামী (অন্য মামলায় ফাঁসি কার্যকর), সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুত্ফুজ্জামান বাবর, ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফার সামরিক কমান্ডার পরেশ বড়ুয়া এবং দুটি গোয়েন্দা সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ ১৪ জনকে ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয়। অস্ত্র আইনে করা অন্য মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ হয় একই আসামিদের।

বিচারিক আদালতের রায়ের পর ২০১৪ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি রায়সহ মামলার নথিপত্র হাইকোর্টের ডেথ রেফারেন্স শাখায় পৌঁছে, যা ডেথ রেফারেন্স মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়। অন্যদিকে কারাগারে থাকা দণ্ডিত আসামিরা সাজার রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৪ সালে হাইকোর্টে পৃথক আপিল করেন।