মুক্তিযোদ্ধা তালিকা থেকে অমুক্তিযোদ্ধাদের স্বেচ্ছায় নাম প্রত্যাহারের আহ্বান উপদেষ্টার
মুক্তিযোদ্ধা তালিকা থেকে অমুক্তিযোদ্ধাদের স্বেচ্ছায় নাম প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়ে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই–আজম বলেন, যদি কোনো ব্যক্তি স্বেচ্ছায় মুক্তিযোদ্ধা তালিকা থেকে নিজের নাম প্রত্যাহার করে চলে যেতে চান, তাহলে তাঁকে দায়মুক্তি (ইনডেমনিটি) দেওয়া হবে। সাধারণ ক্ষমা করে দেওয়া হবে। নাম প্রত্যাহার না করলে প্রতারণার দায়ে তাঁদের অভিযুক্ত করা হবে। একই সঙ্গে শাস্তির আওতায় আনা হবে।
আজ বুধবার মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন উপদেষ্টা।
মহান বুদ্ধিজীবী দিবস ও মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রমের অগ্রগতি সম্পর্কে জানাতে আজকের সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এ সময় মন্ত্রণালয়ের সচিব ইসরাত চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপদেষ্টা ফারুক–ই–আজম বলেন, ‘অমুক্তিযোদ্ধাদের একটি তালিকা করা হচ্ছে। এটি নির্দিষ্ট করা হলে তাদের নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হবে। প্রতারণার আশ্রয় নেওয়ায় তাদের শাস্তি পাওয়া উচিত। আমরা আশা করছি, খুব দ্রুত সময়ে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে নীল তালিকা, লাল তালিকাসহ নানা তালিকা করা হয়েছে। অনুরাগের বশে, আত্মীয়তার খাতিরে বা অন্য কোনো প্রলোভনে মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় অনেকের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তাদের চিহ্নিত করতে সময় লাগবে।
ফারুক–ই–আজম বলেন, ‘আমরা চাই না সত্যিকারের কোনো মুক্তিযোদ্ধার নাম তালিকা থেকে বাদ পড়ুক। তাঁদের মর্যাদা ক্ষুণ্ন হোক। মুক্তিযোদ্ধাদের মর্যাদা অক্ষুণ্ন রেখেই মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা করা হবে। তবে কাজটি খুব দুরূহ।’
সংবাদ সম্মেলনে উপদেষ্টা বলেন, এই মুহূর্তে রাজাকারের তালিকা মন্ত্রণালয়ে নেই। এ বিষয়ে কোনো ফাইল পাওয়া যায়নি। তবে রাজাকারের তালিকা করতে চাইলেও করা যাবে না। বাস্তবতা অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই। ৫০ বছর আগের ঘটনা। কে আছে, কে নেই। তাই, রাজাকারের তালিকার কাজটি করা দুরূহ।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সরকারি চাকরিতে এ যাবৎ মুক্তিযোদ্ধা কোটায় কতজন নিয়োগ পেয়েছে, তার একটি পূর্ণাঙ্গ ডেটাবেজ তৈরির কাজ চলছে। এ পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় নিয়োগপ্রাপ্তের সংখ্যা ৮৯ হাজার ২২৫।
কী উদ্দেশ্যে এই তালিকা করা হচ্ছে, এমন প্রশ্নের জবাবে ফারুক–ই আজম বলেন, অভিযোগ আছে, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান না হয়েও অনেকে সরকারি চাকরিতে ঢুকেছেন। এটি যদি প্রমাণিত হয় তাহলে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। তাদের চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে। একই সঙ্গে প্রতারণার আশ্রয় নেওয়ায় শাস্তির আওতায় আনা হবে।