সাঈদীর মৃত্যু: পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে জামায়াতের ১১৬ নেতা–কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা
মানবতাবিরোধী অপরাধে আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে পুলিশের ওপর হামলা ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে মামলা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে পল্টন থানায় জামায়াতের ১১৬ নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলাটি করেন উপপরিদর্শক (এসআই) সালাউদ্দিন।
আজ বুধবার মামলার বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেন পল্টন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাহউদ্দিন। পুলিশের ওপর হামলা ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার ঘটনায় আটক ১৬ নেতা-কর্মীকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
গত সোমবার রাতে সাঈদী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) হৃদ্রোগ বিভাগে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
ওসি সালাহউদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, জামায়াত নেতা সাঈদীর মৃত্যুর ঘটনায় গতকাল বাদ জোহর জামায়াতের নেতা–কর্মীরা জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের ভেতরে বিক্ষোভ মিছিল করেন।
একপর্যায়ে তারা বায়তুল মোকাররমের উত্তর ফটকে বেরিয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়েন। পরে তাঁরা বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ের কাছে শোক দিবসে অংশ নিতে আসা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা চালান।
ওসি সালাহউদ্দিন আরও বলেন, বিক্ষোভ মিছিলের পর অভিযান চালিয়ে জামায়াতের ১৬ নেতা–কর্মীকে আটক করা হয়। এ ছাড়া মামলায় অজ্ঞাত ১০০ জামায়াত নেতা–কর্মীকে আসামি করা হয়েছে। গ্রেপ্তার ১৬ জনকে আজ আদালতে পাঠানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০১০ সালের ২৯ জুন রাজধানীর শাহীনবাগের বাসা থেকে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয় সাঈদীকে। পরে ওই বছরের ২ আগস্ট মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট, নির্যাতন ও ধর্মান্তরে বাধ্য করার মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন। পরে তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছিলেন।
দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর আপিলের ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে রায় দেন ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর। সেই রায়ে সাজা কমিয়ে মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এত দিন ওই সাজা ভোগ করছিলেন তিনি।