সাক্ষাৎকার

অবশ্যই সংসদে আওয়ামী লীগের হয়ে অংশ নেব: তাহমিনা 

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শক্তিশালী প্রার্থীকে হারিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জয় পেয়েছেন যাঁরা, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন মাদারীপুর–৩ আসনে তাহমিনা বেগম। গতকাল সোমবার তিনি কথা বলেছেন প্রথম আলোর সঙ্গে।

মাদারীপুর-৩ (সদর একাংশ, কালকিনি ও ডাসার) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য আবদুস সোবহানকে (গোলাপ) বিপুল ভোটে পরাজিত করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী (ঈগল প্রতীক) তাহমিনা বেগম। তাহমিনা সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য ও কালকিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি।

প্রথম আলো:

এই আসনে নৌকার প্রার্থী ছিলেন বর্তমান সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সোবহান (গোলাপ)। তাঁর মতো প্রার্থীর বিপক্ষে নির্বাচন করার সাহস করলেন কীভাবে?

তাহমিনা: প্রকৃতপক্ষে আমি প্রার্থী হতে চাইনি। উনি (আবদুস সোবহান) বিভিন্ন অনিয়ম করেছেন, জুলুম করেছেন। জনমনে ক্ষোভ ছিল। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হবে। মাদারীপুর-৩-এ আবদুস সোবহানের মতো প্রার্থী দিয়ে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন সম্ভব না। তখন দলের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি, স্থানীয় আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক ও বিশিষ্ট ব্যক্তিরা মিলে সভা করি। সবাই সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত নেয়, একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী দিতে হবে। 

স্বতন্ত্র প্রার্থী আমি হব, সেটা জানা ছিল না। দলের সবাই আমার নাম প্রস্তাব করেন। আমি চিন্তাভাবনা করার জন্য দুই দিন সময় চাই। আগে নির্বাচন করেছেন এমন দুজন নেতাকে প্রার্থী হতে অনুরোধ করি। নেতারা সবাই আমাকে নির্বাচন করতে অনুরোধ করেন। ইতিমধ্যে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ঘোষণা দেন, দলের নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করতে পারবেন। এরপর আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হই। 

প্রথম আলো:

নির্বাচনের শুরু থেকেই আপনার প্রচারে বাধা দেওয়া হয়। মিছিলে বোমা হামলা, কর্মীকে কুপিয়ে হত্যাসহ একাধিক সহিংসতার ঘটনা ঘটে। এমন পরিস্থিতিতে শেষ পর্যন্ত মাঠে থাকতে পারলেন কীভাবে? 

তাহমিনা: ভোটার, জনপ্রতিনিধি, আওয়ামী লীগের নেতা সবাই তাঁর (নৌকার প্রার্থী) বিরুদ্ধে একাট্টা হয়। সবাই আমার পাশে থাকায় হামলা করেও দমন করতে পারেনি। প্রশাসনও শেষ পর্যন্ত নিরপেক্ষ পরিবেশ রক্ষা করেছে। 

প্রথম আলো:

আপনার বিজয় মিছিলেও হামলার ঘটনা ঘটেছে। সংসদ সদস্য হিসেবে এলাকায় শান্তিপূর্ণভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন?

তাহমিনা: পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচিত হয়েছি। ওনারা চাইলে বাধা দিতে পারেন। আমি ৪৪ বছর ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে আছি। দলের নেতা-কর্মীরা আমার পাশে আছেন, নির্বিঘ্নে দায়িত্ব পালন করতে পারব; এই মনোবল আমার আছে।

প্রথম আলো:

নির্বাচিত তো হলেন। সংসদে আপনার ভূমিকা কী হবে? আওয়ামী লীগে যোগ দেবেন, নাকি স্বতন্ত্ররা মিলে কোনো জোট করবেন? 

তাহমিনা: আমি তো দল থেকে পদত্যাগ করিনি, আমার বিরুদ্ধে কোনো সাংগঠনিক ব্যবস্থাও নেওয়া হয়নি। স্বতন্ত্র প্রার্থী নির্বাচন করেছি দলের সভাপতি শেখ হাসিনার ঘোষণাবলে। আমি অবশ্যই সংসদে আওয়ামী লীগের হয়ে অংশ নেব। 

● সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সামছুর রহমান