দেশ গঠনের আরেকটি সুযোগ এসেছে: বিআইপি
নগর ও গ্রাম উন্নয়নের ক্ষেত্রে বৈষম্যহীন পরিকল্পনা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন পরিকল্পনাবিদেরা। তাঁরা বলেছেন, বিগত সরকারের আমলে নেওয়া উন্নয়ন প্রকল্পগুলো মূল্যায়ন করে নির্মোহ সিদ্ধান্ত নিতে হবে। বর্তমান সরকারকেও প্রশ্ন করার সুযোগ থাকতে হবে।
আজ শনিবার রাজধানীর বাংলামোটরে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথাগুলো বলা হয়। ‘নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে পরিকল্পনাবিদদের প্রত্যাশা’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে নগর–পরিকল্পনাবিদেরা নিজেদের কথা তুলে ধরেন।
বিআইপি সভাপতি আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, এই সরকারের কাছে মানুষের অনেক প্রত্যাশা। দেশ গঠনের আরেকটি সুযোগ এসেছে। সবাইকে ভূমিকা রাখতে হবে। তিনি আরও বলেন, ঢাকায় যেসব মাঠ দখল হয়েছিল, সেগুলো উন্মুক্ত করে দিতে হবে। শুধু ঢাকাকেন্দ্রিক উন্নয়ন যেন না হয়। গ্রামকে শহর বানানোর ধারণা থেকে সরে আসতে হবে।
এই সরকারকেও প্রশ্ন করতে হবে উল্লেখ করে বিআইপি সভাপতি বলেন, তাঁদের পক্ষ থেকে একটি রূপরেখা এই সরকারের কাছে তুলে ধরা হবে।
বিআইপির সাধারণ সম্পাদক শেখ মুহম্মদ মেহেদী আহসান পরিকল্পনাবিদদের প্রত্যাশা লিখিত বক্তব্যের মাধ্যমে তুলে ধরেন। তাতে তিনি সরকারের সব সংস্থার কাঠামোগত সংস্কারের কথা বলেন।
পরিকল্পনাবিদদের প্রত্যাশার মধ্যে রয়েছে পরিকল্পনার ওপর ভিত্তি করে প্রয়োজন ও ন্যায্যতা অনুযায়ী প্রকল্প গ্রহণ, নগর, অঞ্চল ও গ্রামীণ পরিকল্পনা আইন ও জাতীয় নগর উন্নয়ন নীতিমালা তৈরি, ঢাকাকেন্দ্রিক উন্নয়ন ধারণার বিকেন্দ্রীকরণ করে দেশের আঞ্চলিক পর্যায়ে উন্নয়ন নিশ্চিত করা, স্থানীয় সরকারব্যবস্থা শক্তিশালী করা ও বিকেন্দ্রীকরণ, দেশের ট্রাফিক ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানো, সরকারি সংস্থা থেকে শুরু করে নীতিনির্ধারকেরাও যেন গণপরিবহন ব্যবহার করেন, তা নিশ্চিত করা এবং শিক্ষার্থীদের তিন মাসে অন্তত এক দিন স্কুলের আশপাশে সচেতনতা বৃদ্ধিসংক্রান্ত প্রচারণায় অংশগ্রহণ, বৃক্ষরোপণ, ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ও পরিচ্ছন্নতার মতো স্বেচ্ছাসেবা কার্যক্রমে যুক্ত করা।
সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনাবিদেরা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার যে প্রকল্পগুলো নিয়েছে, সেগুলো মূল্যায়ন করে সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে। ফুটপাতে কোনো দলীয় কার্যালয় গড়ে ওঠার সুযোগ দেওয়া যাবে না। বড় শহরে বড় পরিকল্পনা হলে অন্য শহরেও তার অবস্থান বুঝে উন্নয়ন করতে হবে। কারিগরি প্রকল্পে কারিগরি লোকদেরই বসাতে হবে। আমলাতন্ত্র যেন আগের সরকারের আমলের মতো জেঁকে না বসে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন বিআইপির সহসভাপতি সৈয়দ শাহরিয়ার আমিন, যুগ্ম সম্পাদক তামজিদুল ইসলাম, কোষাধ্যক্ষ মু. মোসলেহ উদ্দীন হাসান প্রমুখ।