চট্টগ্রামে খালে পড়ে যুবকের মৃত্যু
চট্টগ্রাম নগরের আছদগঞ্জের কলাবাগিচা খালে পড়ে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। আজ সোমবার বিকেল চারটার দিকে অজ্ঞাতপরিচয়ের ওই যুবক খালে পড়ে যান। সাড়ে চারটার দিকে তাঁকে উদ্ধার করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
মৃত্যুর বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এস এম ওবায়েদুল হক। তিনি বলেন, ওই যুবকের নাম-পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি। বয়স আনুমানিক ২৫ বছর।
ওই যুবককে খাল থেকে স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করছেন, এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দিয়েছেন ৩৪ নম্বর পাথরঘাটা ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পুলক খাস্তগীর। এতে দেখা যায়, পাঁচজন স্থানীয় যুবক খালে পড়ে যাওয়া ওই ব্যক্তির নিথর দেহ টেনে ওপরে তুলছেন। পরে পুলক খাস্তগীর প্রথম আলোকে বলেন, বিকেল সাড়ে চারটার দিকে ওই খালে কোনোভাবে পড়ে যান অজ্ঞাতপরিচয়ের যুবকটি। স্থানীয় এক নারী বিষয়টি দেখতে পেয়ে সবাইকে খবর দেন। পরে তাঁকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন।
চট্টগ্রামে খাল-নালায় পড়ে মৃত্যুর ঘটনা কোনোভাবেই থামছে না। এর আগে গত বছরের ৩ সেপ্টেম্বর নগরের ডবলমুরিং থানাধীন সিডিএ আবাসিক এলাকার খালে নেমে নিখোঁজ হয় আবদুল্লাহ (৫)। এক দিন পর আবদুল্লাহর মরদেহ পাওয়া যায়।
আবদুল্লাহ ছাড়াও গত তিন বছরে চট্টগ্রাম নগরের নালা ও খালে পড়ে অন্তত সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে গত বছরের ২৭ আগস্ট নগরের আগ্রাবাদের রঙ্গিপাড়ায় ইয়াছিন আরাফাত নামের দেড় বছর বয়সী এক শিশু নিখোঁজ হয়। পরদিন শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া গত বছরের ৭ আগস্ট চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ফতেহপুর ইসলামি হাটসংলগ্ন বাদামতলা এলাকার নালায় পড়ে মৃত্যু হয় কলেজছাত্রী নিপা পালিতের (২০)।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের হিসাবে, নগরে উন্মুক্ত নালা-নর্দমা ও খালে ঝুঁকিপূর্ণ স্থান চিহ্নিত করা হয়েছে ৫ হাজার ৫২৭টি। এর মোট দৈর্ঘ্য ১৯ হাজার ২৩৪ মিটার। সিটি করপোরেশন সূত্র বলছে, পথচারীদের নিরাপদে চলাচলের জন্য গত তিন বছরে প্রায় ২৫ হাজার বর্গফুট স্ল্যাব মেরামত এবং নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছে। আর ঝুঁকিপূর্ণ খালের পাড়ে ১৫ হাজার বর্গফুট রক্ষাপ্রাচীর নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু এখনো নগরের ৪১টি ওয়ার্ডে নালা-নর্দমায় কয়েক হাজার মরণফাঁদ রয়েছে।
নগরের উন্মুক্ত নালা-খালে পড়ে একাধিক মানুষের হতাহত হওয়ার ঘটনা ঘটলেও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)—কেউই সরাসরি এর দায় নেয়নি। এসব মৃত্যুর জন্য উল্টো সংস্থা দুটি একে অপরকে দায়ী করে আসছে।