‘অন্তত ডিম-আলু অল্প দামে পাচ্ছি’

কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে ডিম ও সবজি বিক্রি হচ্ছে ট্রাকে। স্বল্প আয়ের মানুষেরা ভিড় করছেন তা কিনতে। আজ সকাল ৯টায় চট্টগ্রাম নগরের চকবাজার এলাকায়ছবি- জুয়েল শীল

মাঝবয়সী ক্ষুদ্র দোকানি নুর হোসেন। নগরের চট্টেশ্বরী এলাকায় ছোট ভাইসহ একটি চায়ের দোকান পরিচালনা করেন তিনি৷ নিত্যপণ্যের বাজারে সবজির দাম ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাওয়ায় বাজার খরচের হিসাব মেলাতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন তিনি।

সরকারিভাবে কম দামে কৃষি পণ্য বিক্রি হচ্ছে শুনে তিনি ছুটে এসেছে চকবাজার এলাকায়। আজ মঙ্গলবার কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের কৃষিপণ্য ওএমএস কার্যক্রমে ট্রাকের পেছনে সারিতে দাঁড়িয়েছিলেন নুর হোসেন। সেখানে সকাল ১০টার দিকে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।

নুর হোসেন বলেন, ‘৪৫০ টাকায় ডিম, আলু, পেঁয়াজ ও দুই পদের সবজি পেয়েছি। বাজারে এগুলো কিনতে গেলে আরও দুই-তিন শ টাকা বেশি লাগত। অন্তত ডিম-আলু অল্প দামে পাচ্ছি।’

ঢাকার পর আজ চট্টগ্রাম নগরে খোলা বাজারে কৃষি পণ্য বিক্রি (ওমএমএস) শুরু করেছে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর। এ দিন সকাল ৯টা থেকে নগরের চকবাজার, দেওয়ানহাট, ষোলোশহর, ফিরিঙ্গিবাজার ও ফিরোজশাহ এলাকায় ওএমএস কার্যক্রম শুরু করে সংস্থাটি।

সকালে চকবাজার ধনীরপুল এলাকায় কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. মাসুদ করিম ও চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলাম। এ ছাড়া অধিদপ্তরের বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. মাসুদ করিম বলেন, ‘ঢাকার পর চট্টগ্রাম নগরের পাঁচটি পয়েন্টে কৃষি পণ্য বিক্রি হচ্ছে। আমরা চেষ্টা করব যাতে বাজার পরিস্থিত স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এ কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব হয়।’

চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলাম বলেন, বাজারে যেসব পণ্যের দাম বেশি, সেগুলো কম দামে ভোক্তাদের কাছে বিক্রি করা হচ্ছে। বিভিন্ন জায়গা থেকে কিনে ভর্তুকি মূল্যে এসব পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে।

প্রতিটি স্থানেই পণ্যের ট্রাক দেখার সঙ্গে সঙ্গে কয়েক শ মানুষ সারিতে দাঁড়িয়ে যান। কৃষি বিপণন অধিদপ্তর জানায়, প্রতি স্থানে ২০০ জন করে এ দিন মোট ১ হাজার জনকে পণ্য দেওয়া হবে৷ প্রাথমিকভাবে আগামী মাসের ১০ থেকে ১৫ তারিখ পর্যন্ত এ কার্যক্রম পরিচালনার পরিকল্পনা রয়েছে।

জানা গেছে, চট্টগ্রামে কৃষিপণ্য ওএমএস কার্যক্রমে ৪৫০ টাকার মধ্যে প্রতিজন ১৩০ টাকা দরে ১ ডজন ডিম, ৭০ টাকা দরে ২ কেজি পেঁয়াজ, ৩০ টাকা দরে ৪ কেজি আলু, ২০ টাকা দরে ১ কেজি পেঁপে ও ৪০ টাকা দরে ১ কেজি করলা কিনতে পারবেন।

চকবাজার এলাকায় কথা হয় অটোরিকশাচালক মোহাম্মদ রতন, গৃহিণী আমেনা বেগম ও দিনমজুর মো. আবুল কাসেমের সঙ্গে। প্রত্যেকেই এসেছেন পণ্য নিতে। তাঁদের সবাই জানান, অন্তত ডিম, আলু, পেঁয়াজের বাড়তি দামে এই পণ্য কিছুটা স্বস্তি দেবে তাঁদের।

চট্টগ্রামের জ্যেষ্ঠ কৃষি বিপণন কর্মকর্তা শাহরিয়ার আকুঞ্জী প্রথম আলোকে বলেন, সম্প্রতি বন্যার প্রভাবে সবজি ও ডিমের দাম বেড়েছে। সাধারণ মানুষ যাতে কম দামে পণ্য কিনতে পারেন, তাই ভর্তুকি মূল্যে এসব পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে।