চাহিদামতো দক্ষ কর্মী বিদেশে পাঠানো যাচ্ছে না: প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রী
বিদেশে কর্মী পাঠানোর ক্ষেত্রে অদক্ষ শ্রমিকদের ওপরই নির্ভর করতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ।
ইমরান আহমদ বলেন, বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশি কর্মীর চাহিদা আছে। কিন্তু চাহিদামতো দক্ষ কর্মী পাঠানো যাচ্ছে না। সব দেশ দক্ষ কর্মীর দিকে যাচ্ছে। যত দ্রুত এদিকে যাওয়া যাবে, দেশ ও জাতির জন্য তত মঙ্গল হবে।
আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস উপলক্ষে আজ রোববার রাজধানীর ওসমানী মিলনায়তনে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন ইমরান আহমদ।
প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রী বলেন, নতুন শ্রমবাজার খুলছে। কিন্তু এগুলো পুরোনো নিয়মে চলবে না। দক্ষ কর্মী তৈরি করতে হবে। দক্ষতা উন্নয়নে মন্ত্রণালয় কাজ করে যাচ্ছে। এ খাতে পুরো কাঠামোও ঠিক করা হচ্ছে। সবকিছু প্রযুক্তিনির্ভর করা হচ্ছে, এতে হয়রানি কমছে।
ইমরান আহমদ আরও বলেন, প্রয়োজন লাখো কর্মী, কিন্তু তৈরি হচ্ছে হাজার। বেসরকারি খাতে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিসের (বায়রা) সদস্যদের অনেকের কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র আছে। এগুলো দক্ষ কর্মী তৈরির প্রক্রিয়ায় নিয়ে আসতে হবে। এতে করে দক্ষ কর্মীর সংখ্যা বাড়বে।
তিনি বলেন, রিক্রুটিং এজেন্সির মালিকেরা কর্মী পাঠাতে দালালের কাছে জিম্মি হয়ে আছেন। এ জিম্মিদশা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। সবাই মিলেমিশে কাজ করলে অভিবাসন ব্যয় কমিয়ে আনা যাবে।
সুযোগ থাকলেও মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানো যাচ্ছে না বলে উল্লেখ করেন প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। তিনি বলেন, দেড় লাখ কর্মীর চাহিদায় মালয়েশিয়ায় গেছেন মাত্র ৩০ হাজার কর্মী। এর কারণ সিন্ডিকেট। দেশে এখন রিক্রুটিং এজেন্সি ১ হাজার ৬০০ কিন্তু দেশটিতে কর্মী পাঠানোর অনুমোদন পেয়েছে ১০০টি। সবার জন্য শ্রমবাজার উন্মুক্ত করা উচিত।
প্রবাসী আয় বাড়াতে প্রণোদনায় জোর দিয়ে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, বৈধ ও অবৈধ পথে ডলারের বিনিময় হারে অনেক পার্থক্য। তাই কিছুটা বাড়তি টাকা পাওয়ার জন্যই হুন্ডি করে প্রবাসীরা টাকা পাঠান। প্রবাসী আয়ে প্রণোদনা আড়াই থেকে বাড়িয়ে ৪ শতাংশ করা যেতে পারে।
আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, পাঁচ বিলিয়ন ডলার ঋণের জন্য আইএমএফের (আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল) নানা শর্ত মানতে হচ্ছে। অভিবাসন খাতকে যথাযথভাবে কাজে লাগিয়ে অবৈধ পথের লেনদেন যদি বৈধ পথে আনা যায়, তাহলে পাঁচ বিলিয়ন ডলার কোনো ব্যাপারই নয়। এর চেয়ে বেশি প্রবাসীরা দিতে পারবেন।
৬৭ জন প্রবাসী সিআইপি ও ১ হাজার ৬৮৮ জন প্রবাসী কর্মীর সন্তানকে শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করা হয় অনুষ্ঠানে। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. শফিকুল ইসলাম। এতে আরও বক্তব্য দেন আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) কান্ট্রি ডিরেক্টর টুমো পোটিআইনেন; আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) চিফ অব মিশন আব্দুসাত্তার এসোয়েভ; ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের মহাপরিচালক মো. হামিদুর রহমান; জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর মহাপরিচালক মো. শহীদুল আলম; বায়রা সভাপতি আবুল বাশার এবং এনআরবি সিআইপি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. মাহতাবুর রহমান।