গীতা বিশ্বাসের পাশে দাঁড়াল জেলা প্রশাসন
ট্রাকে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে থাকা চাল কুড়িয়ে নিতে গিয়ে বাধার মুখে পড়া গীতা বিশ্বাসকে আজ সোমবার জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে চাল-ডালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য ও কিছু টাকা দেওয়া হয়েছে। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রতীক দত্ত গীতার বাড়িতে গিয়ে এ সহায়তা দিয়ে আসেন।
গীতা বিশ্বাসের স্বামী উজ্জ্বল বিশ্বাস প্রতিবন্ধী এবং মানসিক ভারসাম্যহীন। নিঃসন্তান এই দম্পতির বাড়ি মীরসরাই উপজেলার শ্রীপুর গ্রামে। নানা কারণে বাড়ি ছেড়েছেন ১০ বছর আগে। বর্তমানে থাকেন চট্টগ্রামের আগ্রাবাদের চৌমুহনী এলাকার মিয়া বাড়ির নিচতলার একটি ভাড়া ঘরে।
গতকাল রোববার খোলাবাজারে পণ্য বিক্রির (ওএমওস) ট্রাক থেকে চাল না পেয়ে পঞ্চাশোর্ধ্ব গীতা একপর্যায়ে ওএমএসের ট্রাকে উঠে যান। ট্রাকে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা চাল কুড়িয়ে দেড় কেজি চাল নেন থলেতে। এ সময় বিক্রেতারা তাঁর থলেটি কেড়ে নিতে চাইলে আশপাশের মানুষের অনুরোধে তাঁকে সেই চাল বিনা মূল্যে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
চালের জন্য গীতার আর্তনাদ নিয়ে গতকাল প্রথম আলো অনলাইনে ‘ঘরে খাবার নেই, ট্রাক থেকে চাল কুড়িয়ে নিলেন বৃদ্ধা’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। সেই সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতে আজ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাঁর বাড়িতে যান।
এ সময় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গীতাকে ২০ কেজি চাল, ১০ কেজি ডাল, ১০ লিটার তেল, ৪ কেজি আলু, ২ কেজি লবণ, ২ কেজি চিনিসহ প্রায় ২ মাসের নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য ও ৫ হাজার টাকা দেওয়া হয়। গীতা বিশ্বাসকে নিজ বাড়ি মীরসরাইয়ের জায়গাজমি-সংক্রান্ত বিষয়ে জেলা প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন তিনি। পাঠানটুলী ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম বাহাদুর গীতা বিশ্বাসকে ১৫ দিন পরপর চাল, ডালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য পাঠানোর আশ্বাস দেন।
প্রতীক দত্ত বলেন, প্রথম আলোতে ‘ঘরে খাবার নেই, ট্রাক থেকে চাল কুড়িয়ে নিলেন বৃদ্ধা’ শিরোনামে খবরটি জেলা প্রশাসক দেখেছেন। তাঁর নির্দেশে গীতাকে সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। তিনি ইতিমধ্যে মীরসরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) গীতা বিশ্বাসের বিষয়টি মানবিকভাবে দেখার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘তাঁকে বয়স্ক ভাতার কার্ড বা ওএমএসের কার্ড করে দেওয়া যায় কি না, সেটি দেখা হবে।’
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, খবর প্রকাশের পরপরই গীতাকে খুঁজে বের করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। গ্রামের বাড়িতে জমিসংক্রান্ত জটিলতার বিষয়টি দেখার জন্য ইউএনওকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসন থেকে গীতা এবং তাঁর মতো যাঁরা অসহায় আছেন, তাঁদের সর্বাত্মক সহায়তা প্রদান করা হবে বলেও জানান তিনি।