বাংলাদেশকে জ্বালানিসহ সব সুবিধা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি কাতারের
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাতারের আমিরের বৈঠকের পর ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেন, জ্বালানি নিয়ে নতুন চুক্তি শিগগিরই স্বাক্ষরিত হবে।
কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি বাংলাদেশকে বন্ধুরাষ্ট্র উল্লেখ করে জ্বালানিসহ সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকে তিনি এই প্রতিশ্রুতি দেন।
কাতারের রাজধানী দোহায় গতকাল বুধবার দুই নেতার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে জ্বালানি, ব্যবসা ও বিনিয়োগ, বাংলাদেশি জনশক্তি, মুসলিম উম্মাহ এবং বাংলাদেশের উন্নয়ন বিষয়ে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার বিভিন্ন ক্ষেত্র নিয়ে আলোচনা হয়।
পরে প্রেস ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, জ্বালানি সম্পর্কে কাতারের আমির বলেছেন, কাতার থেকে বাংলাদেশে আরও বেশি পরিমাণে জ্বালানি সরবরাহের বিষয়ে নতুন চুক্তি স্বাক্ষরের আলোচনা কয়েক মাস ধরে বিবেচনাধীন। তিনি বলেন, ‘আমি আমির হিসেবে আপনাকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছি যে বন্ধু দেশ হওয়ায় আমি আপনাকে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেব।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এটি (প্রতিশ্রুতি) বাংলাদেশের জন্য বড় অর্জন। তিনি আরও বলেন, এই নতুন চুক্তি শিগগিরই স্বাক্ষরিত হবে।
২০১৭ সালে স্বাক্ষরিত ১৫ বছরের চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ এখন প্রায় ৪০ কনটেইনার (১.৮-২.৫ এমটিএ) জ্বালানি আমদানি করছে। এখন বাংলাদেশ আরও অধিক এলএনজি সরবরাহ চায়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করে কাতারের আমির বলেন, তাঁরা একসময় জানতেন বাংলাদেশ একটি দুর্যোগ ও দারিদ্র্যপীড়িত দেশ। কিন্তু শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে বাংলাদেশের খাদ্যঘাটতি দূর করেছেন।
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার গত সাড়ে ১৪ বছরে দারিদ্র্যের হার ৪১ শতাংশ থেকে ১৮ দশমিক ৫ শতাংশে এবং চরম দারিদ্র্যের হার ২৫ শতাংশ থেকে ৫ দশমিক ৬ শতাংশে নামিয়ে এনেছে। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমরা কিছুটা এগিয়েছি। কিন্তু আমার কাজ শেষ হয়নি। আমি আরও কাজ করতে চাই। কিন্তু আমি একা তা করতে পারব না। আমি সহায়তা চাই। আমার আরও বিনিয়োগ দরকার। আমি আমার দেশকে বিনিয়োগের জন্য উন্মুক্ত করেছি। আপনি পারস্পরিক সুবিধার জন্য বিনিয়োগের ক্ষেত্রে এগিয়ে আসতে পারেন।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কাতারের আমিরকে এ বছরের মধ্যে সম্ভব হলে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান। জবাবে শেখ তামিম বিন হামাদ আল সানি বলেন, তিনি অবশ্যই বাংলাদেশ সফর করবেন এবং এটি এই বছরের মধ্যেই হবে।
মুসলিম উম্মাহ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুসলিম দেশগুলো কোনো কোনো ক্ষেত্রে তুচ্ছ বিষয়ে বিবাদে জড়িয়ে পড়ে, যা মুসলিম উম্মাহর ঐক্যের জন্য অন্তরায়।
জবাবে কাতারের আমির বলেন, তিনি হয়তো মুসলিম উম্মাহকে ঐক্যবদ্ধ করতে পারবেন না, তবে মুসলিম উম্মাহ যাতে আরও অগ্রসর হয়, সে বিষয়ে তাঁর প্রচেষ্টা থাকবে।
কাতারে বাংলাদেশি শ্রমিকদের চাকরি হারানোর আশঙ্কা সম্পর্কে আমির বলেন, এখন ৩ লাখ ৭০ হাজার বাংলাদেশি এখানে আছেন এবং তাঁরা কাতারের জন্য আশীর্বাদস্বরূপ। কাতার নতুন প্রকল্প নিতে যাচ্ছে এবং বাংলাদেশিরা এখানেই থাকবেন এবং তাঁরা পরিশ্রমী ও আন্তরিকভাবে কাজ করছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশিদের নিয়ে খুবই খুশি।’