আবারও ৫ আগস্টের মতো ঐক্য দেখতে চাই: মাহমুদুর রহমান

‘বিপ্লবোত্তর বিভাজনের ষড়যন্ত্র: জাতীয় ঐক্যে করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান। শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মোজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনেছবি: প্রথম আলো

ভারতীয় আধিপত্যের ওপর বিজয় লাভ করা গেলেই ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থান সফল বিপ্লবে পরিণত হবে বলে মন্তব্য করেছেন আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান। তিনি বলেছেন, ‘আবারও ৫ আগস্টের মতো ঐক্য দেখতে চাই। ফ্যাসিবাদ ও ভারতীয় আধিপত্যের বিরুদ্ধে জাতীয় ঐক্য করতে পারলে আমরা আমাদের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে পারব।’

শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মোজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে মাহমুদুর রহমান এসব কথা বলেন। ‘বিপ্লবোত্তর বিভাজনের ষড়যন্ত্র: জাতীয় ঐক্যে করণীয়’ শীর্ষক এই আলোচনা সভার আয়োজন করে ‘গভর্ন্যান্স অ্যান্ড পলিসি রিসার্চ–জিপিআর’ নামের একটি সংগঠন।

আলোচনা সভায় মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘দুদিন ধরে আবার শুনতে পাচ্ছি, হাসিনা নাকি আবার ক্ষমতায় এসেই গেছে! কারণ, আমেরিকায় ট্রাম্প জিতে গেছে। আমেরিকায় কে প্রেসিডেন্ট হলেন, তাতে আমার কী যায় আসে? কারণ, এসব দেশে রাজনৈতিক দল বা নেতা পরিবর্তন হলে তাদের পররাষ্ট্রনীতি পরিবর্তন হয় না।'

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতি পরিবর্তন করা এত সহজ ব্যাপার নয় বলে মন্তব্য করেন মাহমুদুর রহমান। তিনি বলেন, এটা অনেক দীর্ঘমেয়াদি ব্যাপার। আর পররাষ্ট্রনীতি তো শুধু একজনের ওপর নির্ভর করে না। এটি নির্ভর করে রাষ্ট্রের গ্লোবাল স্ট্র্যাটেজির (বৈশ্বিক কৌশর) ওপর। এগুলো পরিবর্তন করতে হলেও ১০ বছর সময় লাগবে।

‘বিদেশি শক্তির মধ্যে ভারসাম্য ও জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে বাংলাদেশকে চলতে হবে বলে মনে করেন মাহমুদুর রহমান। এ ক্ষেত্রে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান খুব চমৎকার কাজ করেছিলেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।

ভারসাম্যপূর্ণ পররাষ্ট্রনীতির জন্যই জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের ৫৩ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে সফল ছিলেন দাবি করে মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘শহীদ জিয়া এই ভূরাজনীতিগুলো বুঝতেন। আমাদেরকে সেখান থেকে শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে। এই ভারসাম্যপূর্ণ নীতির মাধ্যমেই জিয়া ভারতীয় সাম্রাজ্যবাদ মোকাবিলা করতে পেরেছিলেন। তাঁর সময়েই একমাত্র আমাদের গঙ্গার পানির হিস্যা নিয়ে তিনি জাতিসংঘে গিয়েছিলেন এবং বাংলাদেশ তখন ভারতের বিরুদ্ধে ভোটে জয় লাভ করেছিল।’

আলোচনায় অংশ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোহাম্মদ মহসিন রশিদ উপস্থিত অবসরপ্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনাদের সচেতন থাকতে হবে। আপনাদের নিজেদের ভূমিকা পালন করতে হবে।’

কর্নেল (অব.) মোহাম্মদ আবদুল হক আমলাদের সমালোচনা করে বলেন, তারা গোপনে গোপনে দেশ বিক্রি করে দিয়েছিল। আমলা আর পুলিশ সবচেয়ে বেশি দুর্নীতিগ্রস্ত। এই দুটো জিনিসকে ষড়যন্ত্রের ঊর্ধ্বে নিয়ে আসতে হবে। প্রশাসনকে সেদিকে মনোযোগ দিতে হবে। এ সময় প্রথম আলো এবং দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকার সমালোচনাও করেন তিনি।

আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে এয়ার কমোডর (অব.) শফিক, মেজর (অব.) জামান হায়দার, হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আজিজুল হক ইসলামাবাদী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সালমান ইমন, যুক্ত ফোরামের প্রধান সমন্বয়কারী চাষী মামুন প্রমুখ বক্তব্য দেন।