অতীতের তুলনায় এবার নির্বাচনী সহিংসতা কম ছিল বলে পর্যবেক্ষণ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের দুই নির্বাচনী পর্যবেক্ষক সংস্থা। তারপরও সহিংসতা, রাজনৈতিক মেরুকরণ ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা খর্ব হওয়ার কারণে ৭ জানুয়ারির দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মান ক্ষুণ্ন হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের দুই নির্বাচনী পর্যবেক্ষক সংস্থা ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (এনডিআই) ও ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউটের (আইআরআই) যৌথ কারিগরি পর্যালোচনা প্রতিবেদনে এই মূল্যায়ন উঠে এসেছে। আইআরআইয়ের ওয়েবসাইটে ১৬ মার্চ প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়।
নির্বাচনের আগে, নির্বাচন চলাকালীন ও পরের সম্ভাব্য নির্বাচনী সহিংসতা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে বাংলাদেশে কারিগরি মূল্যায়ন প্রতিনিধিদল পাঠিয়েছিল এনডিআই ও আইআরআই। এর আগে গত বছরের ৮ থেকে ১১ অক্টোবর একটি যৌথ প্রাক্-নির্বাচনী মূল্যায়ন মিশন পাঠিয়েছিল তারা।
এনডিআই-আইআরআইয়ের প্রতিবেদনে বিভিন্ন ধরনের নির্বাচনী সহিংসতার বিষয়ভিত্তিক বিশ্লেষণ তুলে ধরে হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, আগের নির্বাচনী পর্বগুলোর তুলনায় এবার শারীরিক ও অনলাইন সহিংসতা কম ছিল। তার মূল কারণ হচ্ছে, দেশজুড়ে দলীয় প্রতিযোগিতার অনুপস্থিতি এবং নির্বাচনী নিরাপত্তার প্রতি রাষ্ট্রের কড়া নজর। তা সত্ত্বেও সহিংসতাসহ কয়েকটি কারণে নির্বাচনের মান ক্ষুণ্ন হয়েছে।
প্রতিবেদনটি বলছে, রাষ্ট্র, শাসক দল ও বিরোধীদের সহিংসতা এবং প্রাক–নির্বাচনী রাজনৈতিক মেরুকরণের তীব্রতায় বাক্স্বাধীনতা ও সংগঠিত হওয়ার স্বাধীনতা সংকুচিত হয়েছে। সংকুচিত হয়েছে নাগরিক পরিসর। এসব কারণেই নির্বাচনের মান খর্ব হয়েছে।
নিজেদের অভিজ্ঞতার আলোকে নির্বাচন কমিশন, সরকারের নির্বাহী ও আইন বিভাগ, রাজনৈতিক দল, নাগরিক সমাজসহ অন্যান্য অংশীজনদের কাছে বেশ কিছু সুপারিশ রেখেছে প্রতিনিধিদল।
এনডিআইয়ের এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের পরিচালক মনপ্রীত সিং আনন্দ বলেন, এই প্রতিবেদন ভবিষ্যতে বাংলাদেশে আরও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য একটি মূল্যবান পথনকশা হিসেবে অবদান রাখবে। অহিংস রাজনৈতিক পরিবেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে নির্বাচনী রাজনীতির নিয়ম ও অনুশীলনে সংস্কারের প্রয়োজন রয়েছে।
আইআরআইয়ের এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় বিভাগের জ্যেষ্ঠ পরিচালক জোহানা কাও বলেন, নির্বাচনে সহিংসতা নাগরিকদের অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে একটি প্রধান প্রতিবন্ধকতা। বাংলাদেশের নির্বাচনকে পুরোপুরি অংশগ্রহণমূলক করতে হলে সবপক্ষকে অহিংস রাজনীতিকে প্রাধান্য দিতে হবে।
বাংলাদেশে অবস্থানকালে এনডিআই ও আইআরআইয়ের পাঁচজন দীর্ঘমেয়াদি বিশ্লেষক বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেন।