চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতিসহ পুরো পর্ষদের পদত্যাগ

চট্টগ্রাম চেম্বারের লোগোছবি: চেম্বারের ফেসবুক থেকে

চট্টগ্রাম চেম্বারের একসঙ্গে ১০ পরিচালকের পদত্যাগের পর সভাপতি ওমর হাজ্জাজ আজ সোমবার পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। তিনি ছাড়া বাকি আরও ১১ পরিচালক আজ পদত্যাগ করেছেন। চেম্বার সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

গতকাল রোববার একসঙ্গে চেম্বারের ১০ পরিচালক পদত্যাগ করেন। ফলে চেম্বারের ২৪ সদস্যের পুরো পর্ষদ ভেঙে গেল। চেম্বার সূত্র জানিয়েছে, ২ সহসভাপতি ও ২১ পরিচালকের পদত্যাগের পর সভাপতি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বাণিজ্য সংগঠন অনুবিভাগের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।

এর আগে আজ চেম্বার সভাপতি (সাবেক) ওমর হাজ্জাজ প্রথম আলোকে বলেন, ‘পরিচালকেরা চেম্বার সভাপতি বরাবর পদত্যাগপত্র জমা দিচ্ছেন। আমি সভাপতি হিসেবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বাণিজ্য সংগঠন অনুবিভাগের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিচ্ছি। সোমবারের (আজ) মধ্যে পদত্যাগের পুরো প্রক্রিয়া শেষ হবে।’

বিষয়টি নিশ্চিত করে চট্টগ্রাম চেম্বারের মহাসচিব ও প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ ফারুক প্রথম আলোকে বলেন, ‘চেম্বারের পুরো বোর্ড (২৪ পরিচালক) পদত্যাগ করেছেন। আমরা পদত্যাগপত্রগুলো বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠাচ্ছি।’

ছাত্র-জনতার গণ-আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে চলে গেলে চেম্বার ঘিরে ব্যবসায়ীদের ক্ষোভ প্রকাশ্যে আসে। ব্যবসায়ীদের বঞ্চিত করে ‘পরিবারতন্ত্র’ প্রতিষ্ঠা করার অভিযোগে কয়েক দিন ধরে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করছিলেন তাঁরা। এ পরিস্থিতিতে গত ২৮ আগস্ট জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি তরফদার রুহুল আমিন ও পরিচালক জহিরুল ইসলাম চৌধুরী পদত্যাগ করেন।

এই দুই পরিচালকের পদত্যাগের চার দিনের মাথায় গতকাল আরও ১০ জন পদত্যাগ করেন। আজ সভাপতিসহ বাকি ১২ জন পদত্যাগ করলেন।

১১৮ বছরের ঐতিহ্যবাহী এই চেম্বার থেকে প্রথম পদত্যাগের ঘটনা ঘটে ওমর হাজ্জাজের নেতৃত্বাধীন বোর্ডের মেয়াদে। গত বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর নতুন বোর্ড দায়িত্ব নেওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যে পরিচালক হিসেবে প্যাসিফিক জিনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর পদত্যাগ করেছিলেন। চেম্বারের ইতিহাসে পুরো পর্ষদ পদত্যাগের ঘটনাও এটি প্রথম।

চট্টগ্রাম চেম্বারে সর্বশেষ ভোট হয়েছিল ২০১৩ সালের ৩০ মার্চ। ওই নির্বাচনে এম এ লতিফ-সমর্থিত মাহবুবুল আলম-নুরুন নেওয়াজ সেলিম পরিষদ ২৪ পদের মধ্যে ২০টিতে জয়ী হয়। সংখ্যাগরিষ্ঠতার সুবাদে মাহবুবুল আলম প্রথমবারের মতো সভাপতি হন। এরপর টানা পাঁচবার ভোটের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচনের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীরা।

সর্বশেষ গত বছরের আগস্টে বিনা ভোটের নির্বাচন হয়। প্রথমে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পরিচালকেরা নির্বাচিত হয়েছেন, এরপর তাঁরা সভাপতি নির্বাচিত করেন। এতে সভাপতি হন ওমর হাজ্জাজ। টানা ভোট না হওয়ায় ব্যবসায়ীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছিল।

ব্যবসায়ীদের মূল দাবি হচ্ছে, চট্টগ্রাম চেম্বারে সুষ্ঠু নির্বাচন। এর আগে টানা পাঁচ নির্বাচনে ভোটাভুটি হয়নি চেম্বারে। গণপদত্যাগের ফলে এখন গণতান্ত্রিকভাবে ভোটাভুটির সুযোগ তৈরি হলো।