বাংলাদেশের ঘটনার ওপর নজর রাখছে জাতিসংঘ
বাংলাদেশে বিরোধী রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা ও প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের খবরে উদ্বেগ জানিয়েছেন সভা–সমাবেশের অধিকারবিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ র্যাপোর্টিয়ার ক্লেমেন্ট ভউল। আজ বৃহস্পতিবার এক টুইটে তিনি বলেন, বাংলাদেশের ঘটনাগুলোর ওপর বিশেষ নজর রাখছেন। বিশেষ করে এ বছরের জুলাই মাস থেকে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে হামলা এবং মৃত্যু ঘটানোর মতো প্রাণঘাতী শক্তি প্রয়োগের উদ্বেগজনক খবর আসার পর থেকে তিনি বাংলাদেশের ঘটনাবলি অনুসরণ করছেন।
জাতিসংঘের এই বিশেষ র্যাপোর্টিয়ার টুইটে আরও বলেন, বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকারের নিশ্চয়তা দিতে হবে এবং বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
পৃথক আরেক টুইটে তিনি বলেন, ‘আমি এর আগে ২০২১ সালে শান্তিপূর্ণ সমাবেশে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার প্রাণঘাতী বল প্রয়োগের অনুরূপ প্রতিবেদন পাওয়ার পর বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলাম।’
ঢাকায় বিএনপির গণসমাবেশ কোথায় হবে, তা নিয়ে গতকাল নয়াপল্টনে দলটির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। এতে মকবুল আহমেদ নামে বিএনপির এক কর্মী নিহত হন। আহত হন দলটির অর্ধশত নেতা-কর্মী।
ওই সংঘর্ষের ঘণ্টাখানেক পরে ঢাকায় নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি উইন লুইস একটি বিবৃতি দেন। তাতে জাতিসংঘের একটি সদস্যরাষ্ট্র হিসেবে মতপ্রকাশ, গণমাধ্যম ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশের স্বাধীনতাসহ মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণাপত্রে অঙ্গীকারের কথা বাংলাদেশকে স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়।
জন্মগতভাবে সব মানুষ স্বাধীন এবং মর্যাদা ও অধিকারের ক্ষেত্রে সমান—সর্বজনীন ঘোষণাপত্রের এই বক্তব্য স্মরণ করিয়ে দিয়ে ওই বিবৃতিতে উইন লুইস বলেন, জাতিসংঘ বাংলাদেশের সব মানুষের সঙ্গে এ ব্যাপারে একাত্মতা প্রকাশ করছে এবং সবার সমান অধিকার, মর্যাদা ও স্বাধীনতার মূল্যবোধ সমুন্নত রাখতে অতীতের মতোই প্রতিশ্রুতিবদ্ধ আছে।
বাংলাদেশে বিরোধী রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের হয়রানি ও গ্রেপ্তারের ঘটনায় জাতিসংঘের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রও উদ্বেগ জানিয়েছে। দেশটির রাষ্ট্রদূত পিটার হাস আজ বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে বলেন, ‘ঢাকায় রাজনৈতিক সহিংসতা ও ভয়-ভীতি দেখানোর খবরে আমরা উদ্বিগ্ন। আইনের শাসনের প্রতি শ্রদ্ধা এবং সহিংসতা, হয়রানি ও ভয়-ভীতি দেখানো থেকে বিরত থাকার জন্য আমরা সবার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’
এর আগের দিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র নেড প্রাইস ওয়াশিংটনে ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, বাংলাদেশে বিরোধী দলের শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশের ওপর কড়াকড়ি আরোপের ঘটনা নিয়ে তাঁর দেশ উদ্বিগ্ন। তিনি বলেন, ‘কোনো দল কিংবা প্রার্থীকে হুমকি, উসকানি অথবা এক দল আরেক দল বা প্রার্থীর ওপর যাতে সহিংসতা ঘটাতে না পারে, বিষয়টি নিশ্চিত করতে আমরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই।’